শনিবার, ৭ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একজনের শুক্রাণু দিয়ে ৬৭ শিশুর জন্ম, নতুন বিতর্কে আইভিএফ

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:০৬ অপরাহ্ন, ২৫শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমা দেশগুলোতে আইভিএফ পদ্ধতিতে গর্ভধারণ বেশ প্রচলিত। তাই স্পার্ম ডোনেশন বা শুক্রাণু দান করাও হয়ে উঠেছে সাধারণ ঘটনা। এবার বিশেষ এ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানই কাল হলো ৬৭ পরিবারের। শুক্রাণু দাতার শরীরে বিরল জিনগত সমস্যার কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছে ৬৭ শিশু। এরই মধ্যে ১০ শিশুর শরীরে ক্যানসার ধরাও পড়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৮ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে একই দাতার শুক্রাণু থেকে জন্ম হয়েছে ৬৭টি শিশুর। জিনগত ত্রুটির বিষয়ে জানা ছিল না ওই দাতার কিংবা সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের। কারণ, সাধারণ জেনেটিক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে এটি শনাক্ত করাও সম্ভব নয়। পরে এ দাতার শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া দুই শিশুর জিনে টিপি ৫৩ নামের একটি মিউটেশন ধরা পড়ে। এ মিউটেশনের কারণে জীবনের কোনো এক সময় বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়, যেমন—রক্তের ক্যানসার বা লিম্ফোমা।

পরে ওই দুই পরিবার আইভিএফ ক্লিনিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে দাতার জিনগত সমস্যার বিষয়টি। পরে ইউরোপীয় স্পার্ম ব্যাংক নিশ্চিত করেছে, ওই দাতার শুক্রাণু ব্যবহার করে অন্তত ৬৭টি শিশুর জন্ম হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির নীতি অনুযায়ী, দাতার শুক্রাণু থেকে সন্তান জন্মের তথ্য গোপন রাখা হয়। তবে এ ঘটনায় তারা সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করেছে। যেসব ক্লিনিক এ দাতার শুক্রাণু গ্রহণ করেছিল, তাদের সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

এরপর থেকে সব শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা শুরু হয়। ৬৭ শিশুর মধ্যে ২৩টি শিশুর শরীরে টিপি ৫৩ মিউটেশন পাওয়া গেছে। যেসব শিশুর দেহে এ জিন পাওয়া গেছে, তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে—যেমন সারা শরীরের এমআরআই, মস্তিষ্ক, স্তন ও তলপেটের আলট্রাসাউন্ড। যদি তারা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, তাহলে এসব পরীক্ষার মাধ্যমে আগেভাগে শনাক্ত হবে, এতে চিকিৎসাও দ্রুত শুরু করা যাবে।

ফ্রান্সের রোয়াঁ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জীববিজ্ঞানী ড. এডউইজ কাসপার বলেন, ‘একজন শুক্রাণুদাতার মাধ্যমে সর্বোচ্চ কতটি শিশুর জন্ম দেওয়া যাবে—ইউরোপজুড়ে তার সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার। আমি বলছি না যে, সব দাতার জিনোম পরীক্ষা করতে হবে। যদি কারও কোনো ত্রুটি থাকে, তাহলে জিনগত রোগ ছড়িয়ে পড়ার অস্বাভাবিক উদাহরণ তৈরি হবে। তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী হলাম আমরা। ইউরোপে প্রত্যেক পুরুষের তো ৭৫টি সন্তান থাকে না!’

এইচ.এস/

আইভিএফ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন