শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ৪৭ দেশের ৪৪৩ স্বেচ্ছাসেবীকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল *** মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরলেন দুর্গতিনাশিনী *** শহিদুল আলমের জাহাজ এখনো আটক হয়নি, দিলেন ভিডিওবার্তা *** পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু *** এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না *** শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক *** ঝড় উপেক্ষা করে গাজার পথে ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা *** ইসরায়েলি সব কূটনীতিককে কলম্বিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পেত্রোর *** এআই ‘অভিনেত্রী’-কে ঘিরে যে কারণে তীব্র সমালোচনা, ক্ষুব্ধ হলিউড তারকারা *** ফ্লোটিলা থেকে আটক ২২৩ জনকে ইউরোপে পাঠাবে ইসরায়েল, জাহাজগুলোর ভাগ্য অনিশ্চিত

মশা মারার উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়, ডেঙ্গু রোগীর জন্য হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ!

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০২:০৬ অপরাহ্ন, ২০শে মার্চ ২০২৪

#

রাজধানীতে কিউলেক্স মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বস্তুত বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার-সর্বত্রই মশার উপদ্রব বেড়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জোর কার্যক্রম চালানো হচ্ছে দাবি করা হলেও ভুক্তভোগীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের কাজ শুধুই লোক দেখানো। এ মশার প্রধান প্রজননস্থল দূষিত ও বদ্ধ জলাশয়। এসব পরিষ্কার করা বা সেখানে ওষুধ ছিটানো সাধারণ নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এডিস মশা ডেঙ্গুর বাহক হওয়ায় মানুষ অতিসতর্ক থাকে। কিন্তু কিউলেক্সের ব্যাপারে তারা অনেকটাই উদাসীন। অথচ মশার এ প্রজাতি বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহন করে। মানুষকে রোগ-ব্যাধি ও অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন। 

কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, কয়েক মাস আগেই তারা কিউলেক্স মশা প্রজননের ভয়াবহ রূপ ধারণের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। প্রশ্ন হলো, দুই সিটি করপোরেশন তা আমলে নেয়নি কেন? কিউলেক্স মশার ভয়াবহ উপদ্রবের সময়ও সিটি করপোরেশন কার্যক্রমে কাঙ্ক্ষিত গতি দৃশ্যমান নয়। বর্তমানে অভিজাত এলাকায়ও মশক কর্মীদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। এ থেকে বোঝা যায়, মশক নিধনে কর্তৃপক্ষ কতটা উদাসীন। কীটতত্ত্ববিদদের মতে, দেশে প্রায় ১২৩ প্রজাতির মশা রয়েছে। রাজধানীতে ১৬ প্রজাতির মশা বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে কিউলেক্স মশা প্রায় ৯০ শতাংশ। এ তথ্য থেকেই স্পষ্ট, কিউলেক্স মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের কতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অতীতে লক্ষ করা গেছে, মশার উপদ্রব বাড়লে সিটি করপোরেশনের তোড়জোড়ও বাড়ে। কিন্তু এখন সেটাও লক্ষ করা যায় না। বস্তুত মশক নিধনের কাজটি বছরজুড়ে করা না হলে এর সুফল পাওয়া যায় না। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বক্স-কালভার্টগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে মশার ওষুধ ছিটানো যায় না। এছাড়া বিভিন্ন আবর্জনায় রাজধানীর ড্রেনগুলো ভরাট থাকে; এতে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়। এ জমাটবদ্ধ পানিতে কিউলেক্স বংশবিস্তার করছে। মশার এসব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান সড়কের পাশে ওষুধ স্প্রে করা হলেও ভেতরের গলিতে মশক নিধন কর্মীদের খুব একটা দেখা যায় না। মশক নিধনে কর্তৃপক্ষকে বছরব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। 

এদিকে মার্চ মাস শেষ হতে এখনও ১১ দিন বাকি। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছেন ২০ জন। দেশে কোনো বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস) ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ রূপ আর কখনো দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৯ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭ জন এবং ঢাকার বাহিরে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কার্যকর এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারলে এবারও ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা নির্মূলে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

১৯ মার্চ দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধমূলক সমন্বয় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন কথা বলেন। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রোগীকেও দ্রুত হাসপাতালে আসার অনুরোধ থাকবে। কেননা দেরি করলে ঝুঁকি বাড়ে। সমন্বয় যেন ভালো হয় তাই এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।

ডেঙ্গু রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ অবশ্যই আগাম সতর্কতামূলক একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে এক মহা বিপর্যয় ঘটে গেলেও সারা বছর মশা নিধনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি নগরবাসীর। যে উদ্যোগ সারাবছর ব্যাপকভাবে থাকা উচিত ছিল বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকরা। 

আই.কে.জে/ 



ডেঙ্গু মশা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250