মঙ্গলবার, ২৯শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** গঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বসতঘরে হামলার নিন্দা, জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি *** থাই রাজার সন্ন্যাসী পুত্রের আবেগঘন বার্তা কীসের ইঙ্গিত *** ব্রাজিলকে শিরোপা জেতানো কোচকে নিয়োগ দিল বসুন্ধরা *** বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই: প্রধান উপদেষ্টা *** প্রধান উপদেষ্টাকে সৌদি আরবের আমন্ত্রণ *** বাংলাদেশসহ ৯৮ দেশে ভূমিকম্পের আগাম বার্তা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে, সক্রিয় করবেন যেভাবে *** ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের মাঝে ফায়ার অ্যালার্ম, তদন্তে ৫ সদস্যর কমিটি *** ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের মাঝে ফায়ার অ্যালার্ম, তদন্তে ৫ সদস্যর কমিটি *** ৩রা আগস্ট খুলছে মাইলস্টোনের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাস *** মাঝ আকাশ থেকে ফেরত এলো বিমানের ঢাকা-দাম্মাম ফ্লাইট

‘রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ঋণ খেলাপিদের ধরা হবে’

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, ৩১শে জানুয়ারী ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামীতে সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

বুধবার (৩১শে জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাংকার্স সভায় এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও) উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকার্স সভায় দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সুদহার, ডলারের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, মামলায় আটকে থাকা অর্থ আদায়ে পদক্ষেপ ও  ব্যাংক খাত সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়। একইসঙ্গে প্রমোট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ) বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সভার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, গত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর সংস্কারের জন্য প্রমোট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ) ঘোষণা করা হয়। সেখানে সংস্কারের ক্ষেত্রে কীভাবে ব্যাংকগুলোর অবস্থান নির্ণয় করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা দেওয়া আছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকের হিসাব ধরে আগামী বছরের মার্চ নাগাদ ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা শুরু হবে।

এজন্য ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের ব্যক্তিগত ভাবে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। আর যেসব ব্যাংকের অবস্থা একেবারেই দুর্বল তাদের ঋণ বিতরণ, আমানত সংগ্রহ থেকে শুরু করে কার্যক্রমের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আবার কোনো কোনো ব্যাংকের একীভূত (মার্জার) করেও দেওয়া হতে পারে। তবে এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলো যদি তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে তাহলে তো কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা আসবে না।

মেজবাউল হক আরও বলেন, আমরা সম্প্রতি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছি। সেখানে আমরা বলেছি আমাদের টার্গেট বাস্তবায়ন পর্যন্ত এই ধরনের মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকট দেখা দিতে পারে। এজন্য তাদেরকে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যাতে তারা তারল্য ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারে।

তিনি বলেন, ব্যাংকের সুশাসন ফেরাতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে খেলাপি ঋণ কমানো এবং সুশাসনের নিশ্চিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হবে।

মুখপাত্র বলেন, মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সময় ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের সুদের হার আরও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

সভা শেষে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকিং খাতের সার্বিক পরিস্থিতি ও  দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সভায় জানানো হয় দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করে উন্নতি করা হবে। গভর্নর ক্ষমতা আছে দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এসব পদক্ষেপে রাজনৈতিক কোনো প্রভাব কাজে আসবে না। এখন মূল কাজ ব্যাংক খাত সংস্কার করা। এ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়টি জানানো হয়েছে, যেন সংস্কারের বিষয় সবাই প্রস্তুত থাকেন। সুদহার বাড়ছে, এটা যেন হঠাৎ অনেক বেশি বেড়ে না যায় সেজন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এখন যে সুদহার আছে সেখানেই সবাইকে থাকতে বলা হয়েছে। বাড়লেও যেন আস্তে আস্তে বাড়ে। বাজারে প্রভাব যেন না পরে।

ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া কাঠামো অনুযায়ী ব্যাংকিং পরিচালনা হবে। খেলাপিদের ধরতে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। এছাড়া ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সবকিছুই নিতে গভর্নর নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো ইতোমধ্যেই কাজ করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। ডলার সংকট অনেকটাই কেটে এসেছে। তবে এখনও ডলারের কিছুটা সংকট রয়েছে। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে যাবে। আর ডলার সংকটের কারণে রমজানের পণ্য আমদানিতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলেও জানান এবিবির এ নেতা।

এসকে/ 

বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ খেলাপি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন