ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার ডেমরায় অবস্থিত একটি হাসপাতালে জটিল গর্ভাবস্থার এক রোগীর চিকিৎসা চলাকালে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে হত্যা মামলার আসামি এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গতকাল রোববার (২৫শে মে) রাতে ডেমরার হাজীনগর এলাকার সেবা হাসপাতাল অ্যান্ড ল্যাবে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, হত্যা মামলার আসামি ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের সময় স্থানীয়রা বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের বেশ ধস্তাধস্তি হয়েছে। পরে ডেমরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানা যায়, ডা. ইমরান হোসেন মাতুয়াইল মাতৃসদন ইনস্টিটিউটে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত। এডিসি বকুল হোসেনের নেতৃত্বে ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি দল গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের দুটি মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি ইমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে এডিসি বকুল গণমাধ্যমকে জানান, ‘প্রযুক্তিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে ডেমরার সেবা হাসপাতালে হত্যা মামলার আসামি ডা. ইমরানের অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করি। যদিও ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, ডা. ইমরান এখনও মহানগর সাইবার ক্রাইম ইউনিটের হেফাজতে আছেন।
এ ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, ডিবির অভিযানের সময় ডা. ইমরান সিজারিয়ান স্কার ইক্টোপিক প্রেগনেন্সি রোগীর অপারেশনের জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দিতে অনকলে ছিলেন। এ সময় রোগীকে ইনজেকশন দিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা অচেতন অবস্থায় রাখা হয়। আর ঠিক ওই মুহূর্তে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সরাসির অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পড়লে হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশের দলের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হলেও পরে ডেমরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে, সিজারিয়ান স্কার এক্টোপিক প্রেগনেন্সি (Cesarean Scar Ectopic Pregnancy-CSEP) একটি বিরল ও গুরুতর গর্ভাবস্থার জটিলতা। সাধারণত এটি জরায়ুর নিচের অংশে ঘটে এবং ‘নন-টিউবাল এক্টোপিক প্রেগনেন্সি’ হিসেবে তা বিবেচিত হয়। জটিল এ পরিস্থিতিতে রোগীর প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে।
এদিকে পুলিশ বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডা. ইমরান। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার মধ্যে একটি গত ৫ই আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় রুজুকৃত গণহত্যা মামলা। এর আগে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং মাতুয়াইল মাতৃসদন ইনস্টিটিউটের আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরএইচ/
ডিবি ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিট সেবা হাসপাতাল চিকিৎসক গ্রেপ্তার
খবরটি শেয়ার করুন