রবিবার, ২২শে জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ইরানের বুশেহর শহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে *** র‍্যাপিডের আলোচনায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা: কালোটাকা তুলে দেওয়া হোক, অসুবিধা কী *** নতুন দল নিবন্ধনে আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে আজ *** ধর্মীয় তিন নেতাকে উত্তরসূরি নির্ধারণ করেছেন আয়াতুল্লাহ খামেনি *** ইউআইইউ'র শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার *** ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর ফোনালাপ *** আলটিমেটাম দিয়ে ৯ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়লেন ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা *** সরকার ভালো কাজ করছে, আমাদের পথ দেখাচ্ছে: মির্জা ফখরুল *** দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে ইসরায়েলের চেয়ে এগিয়ে ইরান *** প্রেম ও দ্রোহের আধুনিক কবি নির্মলেন্দু গুণ

ইরানের বুশেহর শহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, ২২শে জুন ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

পারস্য উপসাগরের উপকূলে ইরানের বুশেহর শহরে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যদি কোনো হামলার শিকার হয়, তবে তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। শুধু ইরান নয়, পুরো উপসাগরীয় অঞ্চল পড়বে বিপদের মুখে। এমনটাই উঠে এসেছে সাবেক আন্তর্জাতিক পরমাণু পরিদর্শক এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণে।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাবেক পরিদর্শক ও স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) ফেলো রবার্ট কেলি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আল জাজিরাকে বলেন, বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানলে ঘটতে পারে ‘ফুকুশিমা-ধরনের’ একটি দুর্ঘটনা। খবর আল জাজিরার।

তার ভাষায়, ‘যদি বুশেহরে বোমা ফেলা হয় কিংবা কুলিং সিস্টেম ব্যাহত হয়, তবে রিঅ্যাক্টরটি গলে পড়তে পারে, এবং তা থেকে অল্প পরিমাণে হলেও তেজস্ক্রিয় গ্যাস নির্গত হতে পারে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল জাপানের ফুকুশিমায়।’

তিনি উল্লেখ করেন, ফুকুশিমায় কেউ মারা যায়নি এবং তেজস্ক্রিয়তা খুব দূর পর্যন্ত ছড়ায়ওনি। ‘বুশেহর একটি জনবহুল শহর, শুধু একটি স্থাপনা নয়। কেউ যদি শহরটিতে হামলা চালায়, সেটাও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে,’ বলেন কেলি।

আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, বুশেহরের পারমাণবিক কেন্দ্রটি রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত। কেলি মনে করেন, এখানে হামলা হলে মস্কো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

আল জাজিরার গবেষণা শাখা আল-ল্যাবস ও আমেরিকা-ভিত্তিক এনপিইসি যৌথভাবে ২০২০ সালের পরিবেশগত তথ্যের ভিত্তিতে একটি সিমুলেশন চালায়। এতে দেখা গেছে, বুশেহরে যদি 'স্পেন্ট ফুয়েল পন্ডে' আগুন লাগে কিংবা রিঅ্যাক্টর কোর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। শুধু একটি রিঅ্যাক্টরে আঘাত এলেও, বাধ্যতামূলকভাবে ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে হতে পারে।

১টি এসএফপি–তে আগুন লাগলে, ৩৪ লাখ মানুষকে সরাতে হতে পারে। ২টি এসএফপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৬৭ লাখে। সিমুলেশনে আশপাশের দেশ ইরান, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তুর্কমেনিস্তানকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বুঝতে সুবিধা হয় এমনভাবে সিমুলেশনটি চারটি মানচিত্রে দেখানো হয়েছে। এতে রঙিনভাবে দেখানো হয়েছে কোন কোন এলাকায় চিরতরে বসবাস নিষিদ্ধ হতে পারে এবং কোথায় স্বেচ্ছামূলক সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।

সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রঙে চিহ্নিত এলাকাগুলোয় বহু দশক ধরে মানুষ বাস করতে পারবে না। বহু এলাকা কার্যত অচল হয়ে পড়তে পারে। অর্থনীতি, কৃষি, পানীয় জল, জনস্বাস্থ্য—সবখানেই পড়বে ব্যাপক প্রভাব।

'স্পেন্ট ফুয়েল পন্ডে'–এ থাকে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি। এগুলো প্রচণ্ড তেজস্ক্রিয় ও অত্যন্ত গরম। এগুলো শীতল পানির মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। যদি সেগুলোতে আগুন ধরে বা পানি শুকিয়ে যায়, তখন তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, ঘটে বিস্ফোরণ। তাতে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে।

এ ঘটনা অতীতে চেরনোবিল ও ফুকুশিমায় ঘটেছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বুশেহরে তা হলে আকারে আরও বড় বিপর্যয় হতে পারে, কারণ এটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং উপসাগরের একেবারে কোল ঘেঁষে।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন