রবিবার, ৮ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে হাসনাতের স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে যা বললেন মাহফুজ আনাম

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, ২৯শে মার্চ ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সরকারের পতনে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম ছাত্রনেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর আলোচিত-সমালোচিত ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে মতামত ব্যক্ত করেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম। এ বিষয়ে তিনি মূল্যায়নের পাশাপাশি কিছু প্রশ্নও তুলেছেন। দেশে চলমান রাজনৈতিক 'বিতর্কের সূত্রপাত হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট' কেন্দ্র করে বলে মনে করেন মাহফুজ আনাম।

তিনি বলেন, "সাম্প্রতিক বিতর্কের সূত্রপাত হয় গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম ছাত্রনেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট থেকে। তিনি গত ২১শে মার্চ ফেসবুক পোস্টে ১১ই মার্চ সেনাপ্রধানের সঙ্গে হওয়া একটি বৈঠকের বিষয়ে লিখেছেন। যেখানে সেনাপ্রধান নাকি বলেছিলেন, ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত নৃশংসতার দায় স্বীকার এবং অপরাধ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বহিষ্কার করে 'রিফাইন্ড' আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। ... বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরায় স্বভাবতই ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।"

তিনি বলেন, 'এর ফলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। যার মধ্যে রয়েছে—ঘটনার ১০ দিন পর কেন এই প্রসঙ্গ তোলা হলো? কেন এ বক্তব্য দলীয় প্ল্যাটফর্মের বদলে হাসনাতের ব্যক্তিগত ফেসবুকে দেওয়া হলো? কেন দলের সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এমন পোস্ট করা হলো?'

মাহফুজ আনামের মতে, 'হাসনাত বয়সে তরুণ হলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিবেচনায় এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তার প্রধানকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করলে কী পরিণতি হতে পারে, সেটা তার জানার কথা। এ সুযোগে কিছু ব্যক্তি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসিত, বিপজ্জনক ও অপমানজনক মন্তব্য করেছেন—যার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।'

বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজ আনাম বলেন, "সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় এ ভয় তৈরি হচ্ছে যে, আমরা নিজেরাই নিজেদের অবস্থান দুর্বল করছি। সবচেয়ে ক্ষতিকর ঘটনা ঘটেছে সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষত সেনাপ্রধানকে নিয়ে। কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে 'ইনফ্লুয়েন্সার'দের একটি মহল সেনাপ্রধানকে ঘিরে আক্রমণাত্মক প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং তার অপসারণ দাবি জানাচ্ছেন। কারণ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে, তিনি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন।"

তিনি বলেন, 'প্রাতিষ্ঠানিক পদে নিয়োগ দেওয়া যে কোনো সরকারের নৈমিত্তিক কার্যক্রমের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কাজেই, শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলেই সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়। বিশেষ করে, সশস্ত্র বাহিনীর মতো একটি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে।' ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক উপসম্পাদকীয়তে মাহফুজ আনাম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'সেনাবাহিনী যদি সত্যিই ক্ষমতা নিতে চাইত, তাহলে ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ৮ই আগস্ট ড. ইউনূস শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত ছিল তাদের মোক্ষম সময়। কিন্তু তারা সেই সময়ে এমন কিছুই করেনি। আমাদের ধারণা, উন্নয়নশীল দেশের খুব কম সেনাবাহিনীই এমন একটি সুযোগ হাতছাড়া করত এবং এ ধরনের সুযোগ হাত ফসকে যেতে দেওয়ার মতো সেনাপ্রধানের সংখ্যাও হাতেগোনা; বিশেষত যখন তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত করার দায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।'

এইচ.এস/


মাহফুজ আনাম

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন