ছবি: সংগৃহীত
মিষ্টি আলু চাষের হারানো গৌরব ফিরে পাচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ১২২ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি।
এর আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১১৬ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪’শ ৭ মেট্রিক টন। খবর বাসসের।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষেত থেকে মিষ্টি আলু তোলা শেষ হতে চলেছে। বাজারে মিষ্টি আলুর উচ্চমূল্য পেয়ে তারা খুশি।
ডিএই সূত্র আরো জানায়, একসময় মানিকগঞ্জ জেলা মিষ্টি আলু চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। সেই সময় জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করা হতো। কিন্তু উৎপাদকরা তাদের পণ্যের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এভাবে আস্তে আস্তে জেলায় মিষ্টি আলুর চাষ কমে যায়।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কুশেরচর গ্রামের মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল জলিল (৭০) বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও প্রতি মণ মিষ্টি আলু ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হতো। বাজারে বিক্রি করে উৎপাদন খরচও আমরা পেতাম না। এখন মিষ্টি আলু অন্যতম সেরা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম চাষের কাটা মিষ্টি আলু প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’
হরিরামপুর উপজেলার চর হরহারদিয়ার আরেক মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল হক (৭৫) বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগে উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আমাদের বালুকাময় জমিতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি আলু চাষ করতাম। স্বাধীনতার পরও বিস্তীর্ণ এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত মানুষ খাদ্য সংকটের জন্য কষ্ট ভোগ করতেন। তখন মিষ্টি আলু ছিল তাদের বিশেষ খাদ্য।’
অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করত এবং নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত আলু বাজারে বিক্রি করত। কিন্তু ন্যায্যমূল্য পেত না। তখনো আধুনিক চাষ পদ্ধতি শুরু হয়নি। গৃহস্থরা তখন জীবিকা নির্বাহের জন্য সেসব জমিতে আউশ ও আমন ধান চাষ করতেন।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন