ছবি : সংগৃহীত
পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশের রয়েছে আলাদা আইন, নিয়ম এবং প্রবিধান। এক দেশে যা ছোটখাট ভুল, সেটিই হয়তো অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে বড় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তেমনই অদ্ভুত এক নিয়ম রয়েছে ইউরোপের দেশ গ্রিসে। আপনি যদি কখনও গ্রিস ভ্রমণে যান, তবে আপনাকে হাই হিল পরার ইচ্ছা বিসর্জন দিতে হবে! অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞা ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন ভ্রমণের ক্ষেত্রে।
ইতিহাসে সমৃদ্ধ দেশটিতে ২০০৯ সাল থেকেই এ নিয়ম বলবৎ রয়েছে। সমুদ্রসৈকত, দুর্গ, মন্দিরসহ অনেক দর্শনীয় স্থান থাকায় ইউরোপের দেশটি পর্যটকদের কাছে অনেক পছন্দের।
কিন্তু গ্রিস তাদের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণের ব্যাপারে বেশ কঠোর। পর্যটকেরা হিল পরে এসব স্থান ভ্রমণ করলে নিদর্শনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একপ্রকার আশঙ্কা থাকে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, সামান্য হিলের গুঁতাতে কীইবা এমন ক্ষতি হবে! আসলে প্রতি বছর সেখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। ফলে ক্ষতির আশঙ্কাও বহুগুণ বেড়ে যায়।
আরো পড়ুন : বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর বাগান কোথায় জানা আছে কি?
এসব নিদর্শন শুধু ইতিহাসের সাক্ষীই নয়, গ্রিসের জাতীয় সম্পদও। এগুলোর ওপর সামান্য আঁচড়ও যেন না পড়ে সেটি নিশ্চিতের ক্ষেত্রে গ্রিকরা তাই অত্যন্ত সচেতন। স্থাপনার ক্ষতিসাধন করতে পারে এমন জুতা পরে ধরা খেলে ৯০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
গ্রিক প্রাগৈতিহাসিক এবং ধ্রুপদী পুরাকীর্তি বিভাগের পরিচালক এলেনি কোরকা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘ভ্রমণকালে নারী পর্যটকদের অবশ্যই এমন জুতা পরতে হবে, যা কোনোভাবেই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ক্ষতি করবে না। মানুষকে এটা অবশ্যই বুঝতে হবে যে এসব স্থাপনারও একটি পৃষ্ঠ রয়েছে।’
এমনকি যদি ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, সেখানে পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মানতে হবে।
হিল ছেড়ে স্নিকার্স পরে হাতে চিপস, চকলেট বা জুস হাতে ঘুরে বেড়াবেন-তেমন আশা করলেও কিন্তু নিরাশই হবেন। কারণ, স্ন্যাকস বা খাবারের আইটেম নেয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এভাবেই গ্রিক প্রশাসন তাদের ঐতিহাসিক নিদর্শনের নিরাপত্তা ও সংরক্ষণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
এর আগে একবার থিয়েটারের মার্বেল সিটগুলোর নিচ থেকে ৬০ পাউন্ডের মতো চুইংগাম সরান পরিচ্ছন্নকর্মীরা। তবে পানির বোতল নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। শুধু যত্রতত্র তা ফেলা যাবে না।
সূত্র: এক্সপ্লোর ডট কম, বারমিংহাম লাইভ
এস/কেবি