রবিবার, ৩রা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবে ঐকমত্য কমিশন *** তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের জন্য হোক: তারেক রহমান *** গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার *** যাত্রীর লাগেজটি নড়ছিল, খুলতেই ভেতরে ২ বছরের শিশু *** তারেক রহমান আসবেন, আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, পথ দেখাবেন: মির্জা ফখরুল *** ১৮ তলা থেকে পড়ে বেঁচে গেল তিন বছরের শিশু *** ট্রাম্পের হুমকিতেও রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখবে ভারত *** নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা *** এলপিজি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম কমল ৯১ টাকা *** নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণে বিএনপির কমিটি

অপরিকল্পিত নয়, প্রয়োজন পরিকল্পিত সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৬:৪৬ অপরাহ্ন, ২৬শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর ঢাকা। বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় আসেন, যার কারণে ঢাকার জনসংখ্যা অতি দ্রুত বাড়ছে। সঙ্গে ময়লা-আবর্জনাও বাড়ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় এবং ঢাকার ক্ষেত্রে তা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের মোট বর্জ্যের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ রাজধানী ঢাকায় উৎপাদিত হয়৷ তাই এ শহরের বর্জ্য অপসারণ করা খুব কঠিন। এর জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

রাজধানীর ত্রুটিপূর্ণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে মশা ও মাছির উপদ্রব বেড়েছে। পাশাপাশি মশা-মাছিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। রাজধানীর যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ, দূষিত বায়ু আর দুর্গন্ধ নগরবাসীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যা শহরের পরিবেশের উপর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। 

বিশেষ করে, এসব আবর্জনার স্তূপ থেকে নির্গত দূষিত পদার্থ বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে জলাশয়গুলোকে দূষিত করছে। যা জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য উভয়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেক সময় দেখা যায়, খোলা স্থানে বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে, এর ফলে বায়ুমণ্ডলে বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে।

কীটতত্ত্ববিদদের মতে, গৃহস্থালির পচনশীল ও ভেজা বর্জ্য মাছির বংশবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। রাজধানীর রাস্তার ধারে যত্রতত্র বর্জ্যের স্তূপ দেখা যায়। যা মাছির বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ। জ্যৈষ্ঠ, বা মধুমাস চলছে এখন, এ কারণে রসালো ফলের বর্জ্য বাড়ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। ফলে গলিত বর্জ্য ড্রেন, ডোবা, নালায় ছড়িয়ে পড়ছে। এসব থেকে মশা-মাছি জন্মাচ্ছে। 

জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, মশা ও মাছির বৃদ্ধি সরাসরি জনস্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাছি বাড়লে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয়ের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ে। মাছি বর্জ্য থেকে জীবাণু বহন করে খাদ্যে মিশিয়ে দেয় এবং সেই খাদ্য খাওয়ার ফলে মানুষ নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়।

বর্জ্য নিয়ে দু’টি কথা চালু আছে, তা হলো- আজকের বর্জ্য আগামী দিনের সম্পদ এবং আবর্জনাই নগদ অর্থ। উন্নত দেশগুলোতে, যেমন সুইডেন ও নরওয়েতে বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহারযোগ্য লাভজনক ভিন্ন বস্তুতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। এজন্য তারা অন্য দেশ থেকে বর্জ্য আমদানিও করছে। 

বাংলাদেশেরও বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। সমন্বিত ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক। এ পরিকল্পনায় বর্জ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি পর্যন্ত সব স্তরের আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বর্জ্য অপসারণ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সিটি করপোরেশনগুলো এ বিষয়ে তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ,পর্যাপ্ত ডাস্টবিন স্থাপন এবং বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ আজ সময়ের অপরিহার্য দাবি। শুধু তাই নয়, নগরবাসীকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

এইচ.এস/

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন