শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরলেন দুর্গতিনাশিনী *** শহিদুল আলমের জাহাজ এখনো আটক হয়নি, দিলেন ভিডিওবার্তা *** পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু *** এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না *** শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক *** ঝড় উপেক্ষা করে গাজার পথে ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা *** ইসরায়েলি সব কূটনীতিককে কলম্বিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পেত্রোর *** এআই ‘অভিনেত্রী’-কে ঘিরে যে কারণে তীব্র সমালোচনা, ক্ষুব্ধ হলিউড তারকারা *** ফ্লোটিলা থেকে আটক ২২৩ জনকে ইউরোপে পাঠাবে ইসরায়েল, জাহাজগুলোর ভাগ্য অনিশ্চিত *** নিঃসঙ্গতা কাটাতে ৭৫ বছর বয়সে বিয়ে, অতঃপর...

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:২৬ অপরাহ্ন, ২৬শে আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে প্রথমবারের মতো টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন পুরুষ রোগী নিজের শরীরে স্বাভাবিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। জিন এডিট (জিন সম্পাদন) করা কোষ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই সফলতা এসেছে। এমন জিন প্রতিস্থাপনের পর সাধারণত যেসব রোগীকে সারা জীবন রোগ প্রতিরোধে ওষুধ সেবন করতে হয়, এই রোগীকে সেটিও করতে হচ্ছে না। তথ্যসূত্র লাইভ সায়েন্স।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই যুগান্তকারী সাফল্যের ঘটনা সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন-এ প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ৯৫ লাখ মানুষ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ রোগে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যানক্রিয়াসে অবস্থিত আইলেট কোষ ধ্বংস করে ফেলে। এসব কোষ ইনসুলিন তৈরি করে।

তাই টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রতিদিন ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়। তবে রোগটি এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়।

আইলেট কোষ প্রতিস্থাপন চিকিৎসার একটি সম্ভাব্য পন্থা হলেও, এতে প্রধান বাধা হলো—রোগীর শরীর নতুন প্রতিস্থাপিত কোষকে ‘বহিরাগত’ মনে করে আক্রমণ করে বসে। এ ধরনের জটিলতা এড়াতে এখন পর্যন্ত রোগীদের সারাজীবন ইমিউনোসাপ্রেসিভ (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমনকারী) ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এই সমস্যার সমাধান করতেই সুইডেন ও আমেরিকার একদল গবেষক সিআরআইএসপিআর বা ক্রিস্পার (CRISPR) প্রযুক্তি ব্যবহার করে দাতার প্যানক্রিয়াস থেকে নেওয়া আইলেট কোষকে জিনগতভাবে পরিবর্তন করেন, যাতে রোগীর শরীর তা সহজে প্রত্যাখ্যান না করে।

এই প্রথমবারের মতো জিন-সম্পাদিত কোষ মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা হলো। প্রতিস্থাপনের ১২ সপ্তাহ পরও রোগীর শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করে চলেছে এবং এতে কোনো রোগ প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

গবেষকরা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘প্রাথমিক হলেও এই গবেষণার ফলাফলে প্রতিস্থাপিত কোষ বা অঙ্গকে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়াতে জিন সম্পাদনার কৌশল যে কার্যকর, তা প্রতীয়মান হয়েছে।’

গবেষণায় ক্রিস্পার প্রযুক্তির মাধ্যমে দাতার কোষে তিনটি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়। এর মধ্যে দুটি পরিবর্তনে কোষের ওপর থাকা এমন প্রোটিনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। এসব প্রোটিন শরীরের শ্বেত রক্তকণিকাকে সংকেত দেয় কোন কোষ বহিরাগত। তৃতীয় পরিবর্তনে সিডি ৪৭ নামে একধরনের প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ানো হয়, যা শরীরের অন্যান্য প্রতিরক্ষা কোষকে কোষটি আক্রমণ না করার সংকেত দেয়।

এই জিন-সম্পাদিত কোষ রোগীর হাতে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। রোগীর শরীর কোষগুলোকে ‘বহিরাগত’ হিসেবে চিহ্নিত করেনি এবং তারা স্বাভাবিকভাবেই ইনসুলিন উৎপাদন করেছে।

যদিও পরীক্ষামূলকভাবে রোগীকে এখনো ইনসুলিন নিতে হচ্ছে এবং তার অল্পমাত্রায় কোষ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পদ্ধতি নিরাপদ এবং ভবিষ্যতের চিকিৎসায় এটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

গবেষক দল এখন পরবর্তী ধাপে যাচ্ছেন—দীর্ঘ মেয়াদে এই কোষগুলো টিকে থাকে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন। পাশাপাশি অন্য রোগীদের ওপর একই পদ্ধতি কার্যকর কি না, সেটিও যাচাই করা হবে।

এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় এক নতুন আশার দ্বার খুলল।

জে.এস/

ডায়াবেটিস ইনসুলিন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250