ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগরীতে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে ৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে কাউন্টার-ভিত্তিক টিকিটিং পদ্ধতিতে গোলাপি রংয়ের বাস চলাচল শুরু হয়েছে। উত্তরার আজমপুর কাঁচাবাজার (বিডিআর মার্কেট) সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন পদ্ধতিতে এসব বাস চলাচলের উদ্বোধন করেন।
ঢাকার আব্দুল্লাহপুর হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে ২১টি কোম্পানির বাস কাউন্টার থেকে টিকিটের ভিত্তিতে চলাচল শুরু করেছে। গোলাপি রংয়ের বাসগুলোতে নির্দিষ্ট বুথ থেকে টিকিট কিনে যাত্রী উঠবে।
ঢাকা বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই রুটে (আব্দুল্লাহপুর হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পথে) দুই হাজার ৬১০টি বাস চলবে। সবগুলো কোম্পানির বাসের রং হবে গোলাপি। একই রঙে চলাচলকারী এসব বাসে টিকিট ছাড়া কেউ উঠতে পারবে না। নগর পরিবহনে শৃঙ্খলা আনতেই এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
ঢাকা শহরে মূলত নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহন করছে। এতে গাড়ি চলাচলে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা করার কারণে সড়কে যানজট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। সে জন্যই ডিএমপি ও বাস মালিকদের যৌথ উদ্যোগে এই সার্ভিস চালু করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখন থেকে বাস কাউন্টার পদ্ধতিতে চালাতে হবে এবং যাত্রীদেরকে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করে গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া গাড়ি দাঁড় করানো যাবে না এবং যাত্রী ওঠানো ও নামানো যাবে না।
আরো পড়ুন : বিকাশমান সিরামিক শিল্পকে বাঁচাতে হবে
চলতি মাসের মধ্যে মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুরে চলাচল করা বাসে এই সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের প্রতিটি রুটে এমন সার্ভিস চালু হবে।
কিন্তু কাউন্টার সিস্টেম ও ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে বাস চলাচলের নিয়ম চালুর দু-এক দিনের ব্যবধানে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। হাঁকডাক দিয়ে শুরু করলেও, নেই পর্যাপ্ত কাউন্টার। টিকিট ছাড়াই যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে নেয়া হচ্ছে যাত্রী। গোলাপি রঙের গাড়ির সংখ্যাও নগণ্য। গাজীপুর থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে বিভিন্ন রুটে গোলাপি বাস চলার কথা থাকলেও ঘণ্টা পর ঘন্টা বসে থেকেও একটি গাড়ির দেখা মিলেছে না। নতুন বাস দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বাসগুলো পুরোনো, ভঙ্গুর, নোংরা ও ছোট। বলা হয়েছিল, নতুন এ সিস্টেমে ভাড়া আগের মতোই থাকবে।কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। জায়গা ভেদে ১০-২০ টাকা বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ তুলছেন।
নতুন এই পদ্ধতিতে বাস স্টপেজ ছাড়া দাঁড়াবে না। কিন্তু কোথাও এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করছে।
অতীতেও ঢাকা শহরের যানজট নিরসন ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরাতে অনেক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোটাতেই কার্যকর ফলাফল আসেনি। পরিবহন মালিকেরা সরকারের চাপে অনেক সময় অনেক কিছু মেনে নেন, কিন্তু তারা বাস্তবে কাজের প্রতিফলন ঘটান না। বাস্তব পরিস্থিতিতে বর্তমান উদ্যোগ খুব ভালো। কিন্তু শুরুতেই হযবরল অবস্থা। গোলাপি বাসে কোথাও কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না। তবে জনগণ আশা করে শুধু কাগজে কলমে নয়, বাস্তবে সেবার প্রতিফলন ঘটুক।
এস/ আই.কে.জে