ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসকের পরামর্শ বা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়া নিজে থেকে যৌন শক্তিবর্ধক ওষুধ সেবনে নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। আমাদের দেশে অনেকে এ বিষয়ে সচেতন নন। যৌন শক্তিবর্ধক ওষুধ বিভিন্ন নামে পাওয়া যায় বাজারে।
যৌন সমস্যায় ভুগছেন, এমন অনেকে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিজে নিজে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ কিনে সেবন করেন। এভাবে তারা যৌন মিলন চালিয়ে যান। এটি একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। যারা এভাবে সেবন করছেন, তারা হয়তো জানেনই না, প্রকৃত অর্থে তাদের সমস্যা কী ও কোথায়।
চিকিৎসকের মতে, 'ইরেকটাল ডিসফাংশন' (যৌন মিলনের সময় পুরুষাঙ্গ ঠিকমতো শক্ত না হওয়া) যে ব্যক্তির হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে এর কারণগুলো প্রথমে শনাক্ত করা জরুরি। কেন এমন হচ্ছে, তা শনাক্ত করে চিকিৎসা করতে হবে। পাশাপাশি স্বল্প সময়ের জন্য ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। যৌন উত্তেজক ওষুধ আজীবন সেবন করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়।
নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. আসমা তাসনীম মনে করেন, 'পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রধানত যেসব যৌন সমস্যা হয়, তার মধ্যে রয়েছে- ইরেকটাল ডিসফাংশন বা উত্থানজনিত সমস্যা, প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বা দ্রুত বীর্যপাত হওয়া এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা না জাগা।'
চিকিৎসকদের মতে, ইরেকটাল ডিসফাংশনের জন্য সাধারণত ওষুধ দেওয়া হয়, যা কিছু ব্র্যান্ডের নামে পাওয়া যায় বাজারে। মূলত এসব ওষুধ যৌন উত্তেজক হিসেবে চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে দিয়ে থাকেন। কার জন্য কোন ওষুধ এবং কত ডোজে দেওয়া প্রয়োজন, সেটি একজন চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে কথা বলে ও পরীক্ষা করে নির্ধারণ করেন।
যারা এই জাতীয় ওষুধ নিজে থেকে সেবন করেন, তারা ভাবেন, ওষুধ ভালো কাজ করছে। সেজন্য সপ্তাহে দুইদিন, পাঁচদিন, যার যে রকম ইচ্ছা, সেভাবেই সেবন করেন। দিনের পর দিন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিতভাবে এভাবে ওষুধ সেবনের কারণে একটা সময় এসব ওষুধ আর কাজে লাগে না। শরীরে রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে। একই সঙ্গে যে কারণে যৌন সমস্যা হচ্ছে, সেটি শনাক্ত ও চিকিৎসা না হওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আরও খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয় রোগীকে।
ডা. আসমা তাসনীম বলেন, 'বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দোকান থেকে ওষুধ কিনে সেবন করলে সাময়িক কিছু সময়ের জন্য যৌন সমস্যা মিটলেও পরে তা খারাপ প্রভাব ফেলবে জীবনে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি হবে। কিডনি, লিভার ও হার্টসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'যাদের উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিয়াক সমস্যা আছে, তাদের শরীরে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রেশার হাই হয়ে হার্ট-অ্যাটাক বা মৃত্যুও হতে পারে।'
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন