বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা চীনের ১০০টিরও বেশি বেআইনি পুলিশ স্টেশন নজরদারির শিকার হচ্ছে এবং কখনো কখনো এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও দেখা যাচ্ছে।
এফবিআই গত এপ্রিল মাসে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি অবৈধ বিদেশী পুলিশ স্টেশন পরিচালনা করার জন্য অভিযুক্ত দুই চীনা আমেরিকানকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয়। এই দুই ব্যক্তি চীন সরকারের সাথে যোগসাজশে অফিসটি চালাতেন বলে জানা যায়। সেখানে হয়রানিসহ বিভিন্ন দমনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো বলেও জানা যায়। তাছাড়া এদের মধ্যে একজন ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসরত এক নাগরিককে হেনস্তা করছিলেন বলেও জানা যায়।
একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৫৩টি দেশে চীন অন্ততপক্ষে ১০২ টি পুলিশ স্টেশন স্থাপন করেছে।
এমনই একটি পুলিশ স্টেশন মার্কিন বিচার বিভাগ তদন্ত করছিলো। একটি বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় পুরুষদের স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং একাউন্টিং অফিস রয়েছে। ফুজিয়ান প্রদেশের ফুঝো শহরের চাংলে জেলার অভিবাসীদের জন্য একটি কেন্দ্র রয়েছে সেখানে। তবে কেন্দ্রটি তালাবন্ধ ছিল।
একই দিনে এফবিআই এবং বিচার বিভাগ প্রায় ৪০ জন চীনা পুলিশ অফিসার ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গত সেপ্টেম্বরে সেফগার্ড ডিফেন্ডারদের একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে এই বিদেশি পুলিশ স্টেশনগুলো সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতার সৃষ্টি হয়। এদেরকে চীনের জরুরি পুলিশ সেবার নাম্বার অনুযায়ী নামকরণ করা হয়েছে। স্টেশনগুলো চীন এবং তার আশেপাশের পুলিশ বিভাগগুলো দ্বারা পরিচালিত হতো।
এমনকি বিদেশে বসবাসকারী এবং ভ্রমণরত চীনা নাগরিকদের পরিষেবা প্রদান করার সময়ও, তারা আন্তর্জাতিক দমন-পীড়নের মতো কার্যক্রম চালায়। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল চীনা প্রবাসীদেরকে চীনে ফিরিয়ে আনা এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।
প্রতিবেদনে ফুঝো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত সার্ভিস স্টেশন এর একটি তালিকা প্রকাশিত হয়।
এর মধ্যে একটি স্টেশন নিউইয়র্কে অবস্থিত। অপর একটি টোকিওর আকাহাবারা জেলায় অবস্থিত। টোকিওর সন্দেহভাজন স্টেশনটি আগে হোটেল হিসেবে পরিচালিত হতো বলে জানা যায়।
চীনের বিদেশি পুলিশ অভিযানের ফলে মঙ্গোলিয়া থেকে ভিন্নমতাবলম্বী লামজাব বোরজিগিনকে গ্রেপ্তার করে চীনা পুলিশ এবং তাকে নির্বাসনে পাঠায়।
তবে কথিত গোপন পুলিশ স্টেশনগুলো নিজেদেরকে ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত সংস্থা হিসেবে জাহির করে। তবে বিশ্বের মধ্যে নিউইয়র্কেই প্রথম এই অপরাধমূলক অভিযোগ দেখা যায়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন মে মাসে একটি সংবাদ সম্মেলনে তথাকথিত বিদেশি পুলিশ স্টেশন এর অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিলেন।
তিনি বলেন, প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসী চীনাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন এবং শারীরিক পরীক্ষা করতে সাহায্য করেছে যারা মহামারীর কারণে চীনে ফিরে যেতে পারেনি।
মে মাসে একজন চীনা কূটনৈতিককে বহিষ্কার করে কানাডা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি হংকং এ অবস্থিত এক প্রবাসী চীনার পরিবারকে হুমকি প্রদান করছিলেন।
এফবিআই এ বিষয়ক একটি ওয়েবসাইট স্থাপন করেছে। তাছাড়া সমস্যাটি আরও কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য কিছু দেশ আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আই. কে. জে/