শনিবার, ২রা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** চুক্তি হয়ে গেলে আমেরিকার অনুমতি সাপেক্ষে গোপনীয়তার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা *** বৃত্তি পরীক্ষা আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে *** ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস *** মায়ামির সঙ্গে কী নতুন চুক্তি করবেন মেসি, যা বলছেন কোচ *** ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে *** মাইকেল জ্যাকসনের মোজা বিক্রি হলো ১০ লাখ টাকায় *** ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স্লোভেনিয়ার *** জুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত ১১৪ জনের মরদেহ তোলা হবে রায়েরবাজার গণকবর থেকে *** জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত, প্রকাশ ৫ই আগস্ট *** টটেনহাম ছেড়ে মেসিদের লিগে যাচ্ছেন সন

রাশিয়াকে অনুকরণ করে পাকা খেলোয়াড় হয়ে উঠছে চীন 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:১৯ অপরাহ্ন, ১লা জুন ২০২৩

#

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলো ধূসর অঞ্চলে কাজ করার জন্য লড়াই করছে। অন্যদিকে পশ্চিমাবাহিনির প্রতিপক্ষ রাশিয়া ও চীনের এ জাতীয় কোন সমস্যা নেই। রাশিয়া বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং চীনও তারই অনুসরণ করছে। 

গত সপ্তাহে, মাইক্রোসফট জানায় যে চীন ভোল্ট টাইফুন নামের একটি দূষিত বা ভাইরাসজনিত সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ অবকাঠামোকে ব্যাহত করার লক্ষ্যে চালু হয়। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি এ হ্যাকিং অভিযানটি চীনা রাষ্ট্র সমর্থিত এবং চীনের সামরিক বাহিনির উন্নত হ্যাকিং ইউনিট দ্বারা পরিচালিত।

চীন তার জাতীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য, ধূসর অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশল, বেসামরিক কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে যা ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং তথ্য পরিবেশের মধ্যে এবং এর মাধ্যমে কাজ করে। এই কৌশলগুলি আন্তর্জাতিক, দ্বিপাক্ষিক সহ একাধিক স্তরে কার্যকর করা যেতে পারে। সাইবার আক্রমণ অবশ্য অনেক দেশের জন্যই যুদ্ধক্ষেত্রের অস্ত্রের বিকল্প হয়ে উঠেছে।

চীনের জন্য অবশ্য সাইবার আক্রমণ নতুন কিছু নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে রাশিয়াকে অনুকরণ করে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে চীন। উপরন্তু এসব আক্রমণের ব্যাপার অস্বীকারও করে চলেছে দেশটি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সম্প্রতি চীনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারাভিযানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন এবং সাইবার আক্রমণ সংক্রান্ত সমস্ত দায় অস্বীকার করেন। তিনি বলেন ফাইভ আইসের (চোখ) মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তার ভূ-রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করতে চাইছে। উল্লেখ্য, ফাইভ আইস বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা সংস্থা এবং এনএসএ বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকিং গ্রুপ। 

পূর্বে মহামারী চলাকালীন মার্কিন ভ্যাকসিন উৎপাদনের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের প্রচেষ্টা চালায় চীন এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্তচর বেলুন কেলেঙ্কারি সকলেরই জানা।

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ঠিক একদিন পর, চীনা নেতা শি জিনপিং তার প্রতিপক্ষের সাথে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাশিয়ায় যান। এ চুক্তি অনুযায়ী চীন ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো গভীর হয়। তবে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রদানের মাধ্যমে সশস্ত্র করে তুলবে, পশ্চিমাদের এ আশংকা এখনও বাস্তবায়িত হয় নি। 

চীন রাশিয়ার পক্ষে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে জনমতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার বলা সবচেয়ে জঘন্য মিথ্যা আখ্যানগুলোর মধ্যে একটি হল ইউক্রেনের মাটিতে তথাকথিত মার্কিন বায়োল্যাবগুলোর উপস্থিতি। তাছাড়া কোভিড-১৯ মহামারীর উৎপত্তি, পশ্চিমা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলমানদের চিকিৎসা সম্পর্কিত বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে চীন। মার্কিন দূতের মতে, চীন বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে শুধুমাত্র রাশিয়ান বিভ্রান্তিমূলক তথ্যগুলোকে প্রচার করার জন্য।

চীন বিভ্রান্তিকর বিষয়গুলোকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সরকারকেও ব্যবহার করছে। প্রাক্তন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান গত বছর দাবি করেছিলেন যে, এই রাশিয়ান সামরিক অভিযান ইউক্রেনে মার্কিন ল্যাবগুলোর গোপনীয়তা উন্মোচন করেছে। যদিও এ বিষয়ে কোন প্রমাণ প্রদান করতে পারেন নি তিনি।

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পরপরই, চীনা রাষ্ট্র-সমর্থিত ইংরেজি ভাষার গ্লোবাল টাইমস সহ চীনা-অধিভুক্ত মিডিয়া আউটলেটগুলো মার্কিন-বিরোধী প্রচারণা চালায়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধবাজ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। অন্যদিকে চীন নিজেকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে দায়িত্বশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তার চিন্তাভাবনা প্রকাশ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে এর কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরে। 

চীনের জন্য, ধূসর অঞ্চলের কৌশল তৈরির চূড়ান্ত লক্ষ্য তাইওয়ান। চীন ইতিমধ্যেই ভিয়েতনাম, জাপান, ভারত, ফিলিপাইন এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে একই ধরনের কৌশল প্রয়োগ করেছে।

অনেক ভূ-রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের দাবি রাশিয়াকে অনুকরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পাকা খেলোয়াড় হয়ে উঠছে চীন।

আই.কে.জে/

Important Urgent

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন