শনিবার, ২রা আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** চোরা শিকার রুখতে গন্ডারের শিংয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ! *** দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না *** বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করল আমেরিকা *** জিম্বাবুয়েকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে বাংলাদেশ *** মেসির কারণেই সেদিন চুপ ছিলেন উরুগুয়ের ফুটবলার *** সাংবাদিক হত্যা মামলার আসামি চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ায় বকশীগঞ্জে বিক্ষোভ *** গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু ৩রা আগস্ট *** ফার্মেসির পরামর্শে ডায়রিয়াতেও শিশুকে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক: গবেষণা *** সরকারি জমিতে অবৈধ রেস্টুরেন্ট-মার্কেট, উচ্ছেদের দাবি স্থানীয়দের *** ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে বাধা দেখছেন না নজরুল ইসলাম খান

চারণ কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, ২রা অক্টোবর ২০২৩

#

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে চারণকবি রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে গ্রেপ্তার এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। 

সোমবার (২ অক্টোবর) সকালে নাগেশ্বরী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, হামলার ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ওসি আরও বলেন, কবি রাধাপদ সরকার নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের গোদ্ধারের পাড় গ্রামের বাসিন্দা। তার নিজ এলাকাতেই এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তাকে বেডের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এক যৌথ বিবৃতিতে বিভিন্ন পেশার ২১ জন নাগরিক এই দাবি জানান। একই সঙ্গে রাধাপদ রায়ের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিও জানিয়েছেন বিবৃতিদাতারা।

তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনার তিন দিনেও রাধাপদ রায়ের ওপর প্রকাশ্যে পৈশাচিক হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা অথবা গ্রেপ্তার করতে না পারা স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায়ভার সংশ্লিষ্ট থানার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এড়াতে পারে না।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নে কবির নিজগ্রামে তার ওপর এই জঘন্য হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় চিহ্নিত হামলাকারী দুই ভাই রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলীর নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও গ্রেপ্তার না করা অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানীয় মানুষের কাছে স্বভাবকবি নামে পরিচিত পল্লীকবি রাধাপদ রায় একজন বাউল সাধক ও শিল্পী। একই সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক তিনি। তার মতো এক অশীতিপর বৃদ্ধের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা দেওয়ার সামিল। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে স্থানীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে; যা মোটেও প্রত্যাশিত নয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন- কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, বিশিষ্ট শিশুসংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুর রহমান সেলিম, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিতরঞ্জন দে, গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশের (জিসিবি) কার্যকরী সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, নৌ-সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, জ্যেষ্ঠ নৌপ্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিকলাল ঘোষ, প্রভারটি ইমুলিনেশন এ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার ফর এভরিহোয়্যারের (পিস) নির্বাহী পরিচালক ইফমা হুসেইন, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, আলোকিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাপ্পিদেব বর্মণ, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম, মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডেভেলপমেন্টের (মেড) নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাংবাদিক ও শিশুসংগঠক রাজন ভট্টাচার্য, সচেতন সংস্থার আহ্বায়ক সাকিলা পারভিন, জনলোকের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম সুজন, ঢাকা উত্তর নাগরিক ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা কামাল আকন্দ, পুরনো ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও মুক্তি শিখার আহ্বায়ক জিহাদ আরিফ।

উল্লেখ্য, 'কেয়ামতের নমুনা জানি কিন্তু মানি না'- আধ্যাত্মিক এই কবিতার রচয়িতা গ্রামীণ কবি রাধাপদ রায়। গ্রামের মানুষের কাছে নিজের লেখা কবিতা সুরে সুরে আবৃত্তি করে ভাইরাল হয়েছেন তিনি। গেল ১০ বছরে ৯০টি আধ্যাত্মিক ও গ্রামীণ কবিতা রচনা করেছেন রাধাপদ রায়। নিজ গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় তিনি গ্রামীণ কবি হিসেবে পরিচিত।

রাধাপদ রায় ৬ বছর আগে গ্রামীণ একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন। বাদ্যযন্ত্রটির নাম দিয়েছেন রঙতাল। বাংলা বাদ্যযন্ত্রে রঙতালে নাম না থাকলেও রাধাপদ এ বাদ্যযন্ত্র সংযোজন করেছেন। তিনি একাই এ বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন। ৫ জোড়া স্টিলের বাটি দিয়ে তিনি এ যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। তার মুখে উচ্চারিত কবিতার সঙ্গে বেজে উঠে রঙতাল। গ্রামের মানুষ সীমাহীন আনন্দ উপভোগ করেন আর আধ্যাত্মিক কবিতায় মুগ্ধ হন।

এসকে/

হামলা চারণ কবি রাধাপদ রায়

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন