ছবি: সংগৃহীত
এই দুনিয়ায় অনেক পেশার নাম তো শুনেছেন, কিন্তু কখনও কি ‘জড়িয়ে ধরা’ পেশার কথা শুনেছেন? এমনই একটি পেশা বেছে নিয়েছেন পোল্যান্ডের আলেকজান্দ্রা কাসপারেক। তিনি আলিঙ্গনের মাধ্যমে পুরুষের একাকিত্ব দূর করার চেষ্টা করেন। তিনি এই কাজকে একটি সংগঠিত ব্যবসায় পরিণত করেছেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘কাডল সালোঁ’। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি মাসে আয় করছেন লাখ টাকা।
আলেকজান্দ্রা কাসপারেক ২০২৩ সালে পোল্যান্ডের কাটোইসে এই প্রতিষ্ঠান খোলেন। এই সালোঁতে একাকিত্বে ভোগা পুরুষদের সহায়তা করা হয়। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে যে সব পুরুষ উদ্বেল হয়ে আছেন, তারা এখানে এসেই পাবেন সমাধান। পেশাদারিভাবে, থেরাপির প্রক্রিয়ায় এখানে পুরুষরা আলিঙ্গনের উষ্ণতা অনুভব করেন।
এই সালোঁতে আসামাত্রই গ্রাহকদের আলিঙ্গনের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর একটি সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচাই করা হয় যে তাদের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা এখন কেমন।
আলেকজান্দ্রা প্রথমেই গ্রাহকদের কাছ থেকে তাদের তথ্য নেন। তার মানসিক স্বাস্থ্য এখন কেমন, কোনো কিছু নিয়ে তিনি স্ট্রেসে আছেন কি না, শারীরিক অবস্থা-জ্বর, ঠান্ডা বা গলা ব্যথার সমস্যা আছে কি না। এমনকি সেই মুহূর্তে তার ক্লায়েন্টের অ্যালকোহলের প্রভাব আছে কি না।
আরো পড়ুন : পৃথিবীর শেষ রাস্তা কোথায় জানেন?
আলেকজান্দ্রা গ্রাহকদের গোসলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন এখানে। এরপর তাদের নতুন পোশাক সরবরাহ করেন এবং সেশন শুরু হয় হ্যান্ডশেক দিয়ে। ধীরে ধীরে তা আলিঙ্গনে পৌঁছায়। সাধারণত এক থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত একেকটি সেশন স্থায়ী হয়। সম্পূর্ণ কাজটিই করা হয় অত্যন্ত পেশাদারিভাবে।
আলেকজান্দ্রা গ্রাহকদের সঙ্গে একটি শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চান এবং তাদের থেরাপির অভিজ্ঞতা দিতে চান। এই সেশন চলাকালীন কোনো অসংলগ্ন বা অশালীন আচরণ করলে সঙ্গে সঙ্গে এই সেশন বাতিল করা হয়।
তার বেশিরভাগ গ্রাহকেরই বয়স ৪০ থেকে ৬০। পুরুষ এবং নারী উভয়েই আছেন। এক ঘণ্টা আলিঙ্গনের জন্য আলেকজান্দ্রাকে দিতে হয় ৩০ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৫৯০ টাকা এবং ২ ঘণ্টার সেশনের জন্য তার চার্জ ৫৮ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৮৭০ টাকা।
আলেকজান্দ্রা জানান, তার কাছে যারা একবার আসেন তারা বেশ স্ট্রেস ফ্রি হয়েই বাড়ি ফেরেন। অনেকে সপ্তাহে অন্তত একবার তার কাছে এই সেশনটি নিতে আসেন। তার নিয়মিত ক্লায়েন্টের পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ আসছেন। তাদের কিছুটা মানসিক স্বস্তি দিতে পেরে আলেকজান্দ্রা নিজেও অনেক খুশি।
এস/ আই.কে.জে/