ছবি: সংগৃহীত
‘বই বেঁচে থাকে লেখার গুণে। লেখাকে প্রাণ দেন লেখক। লেখার বিন্যাস কেমন হবে, তা তিনিই নির্ধারণ করেন। তবে কথাসাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধা যে বিন্যাসেই লিখুন না কেন, তা অন্য সবার থেকে আলাদা হয়ে ওঠে সহজেই। তার যে কোনো বিশ্লেষণ বহুদিকস্পর্শী। তার লেখার গ্রহণযোগ্যতা বাংলা সাহিত্য ও পাঠকের কাছে অনেক বেশি। তার লেখা পাঠকের ভেতর মনোমুগ্ধকর জগত সৃষ্টি করে, যা পাঠককে আনন্দ দেয়, ভাবনার খোরাক জোগায়।
পাঠকনন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধা সম্পর্কে এভাবেও বলা হয়ে থাকে, যে কবিতা লেখেন, তিনি শুধু কবিতাই লেখেন। যে কথাসাহিত্যিক, তিনি শুধুই কথাসাহিত্যিক। তবে প্রশান্ত মৃধা তা নন, তার লেখায় বিচিত্রতা আছে। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি প্রবন্ধ ও কলামসহ নানা ধরনের গদ্য তিনি লিখে থাকেন। ব্যক্তিগত ও রম্য রচনায়ও তিনি আগ্রহী।
শনিবার (১লা ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এক মাসের অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে সুখবর ডটকমের মুখোমুখি হন লেখক প্রশান্ত মৃধা। এবারের একুশের বইমেলাকে তিনি কেমন দেখতে চাচ্ছেন, আয়োজক বাংলা একাডেমির কাছে তার প্রত্যাশা, সর্বাঙ্গীণ সুন্দর মেলার আয়োজনে পরামর্শ এবং চলতি বছরের মেলায় তার লেখা বই আসছে কী না, সেসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুখবরের বিশেষ প্রতিবেদক।
‘এবারের একুশে বইমেলা কেমন দেখতে চাচ্ছেন’, এমন জিজ্ঞাসার উত্তরে প্রশান্ত মৃধা বলেন, ‘বইমেলা আর হাটের তফাতটা বুঝতে চাই। এটা শুধু এবারে বলে নয়, অনেকদিন ধরেই আমার মনে হয়, একুশের বইমেলা একটা হাটে রূপান্তরিত হয়েছে। মেলা ভিন্ন জিনিস। হাট আর মেলার তফাতের যে যত্ন, সেটা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’
একুশে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির কাছে তার প্রত্যাশা, ‘‘মেলায় যেন সম্পাদিত বই বেরোয়, সে-দিকটা প্রথমেই খেয়াল দেওয়া। এই একটি বিষয় হলেই অনেক বিষয় মিটে যায়। যেমন ধরুন, বইমেলায় একাধিক স্টলে শোভা পায় ‘গীতাঞ্জলি’র বদলে ‘গীতাঞ্জলী, ‘পথের পাঁচালী’র বদলে ‘পথের পাঁচালি’। মানিক বা বিভূতিভূষণ ‘বন্দোপাধ্যায়’ এর বই। জীবনানন্দ ‘দাস’ এর বনলতা সেন। সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে-বিদেশে’র প্রথম বাক্যে ভুল। শওকত ওসমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সমগ্র-সংগ্রহ ভুলে ভরতি। আর বলার দরকার নেই।”
সর্বাঙ্গীণ সুন্দর মেলার আয়োজনে তার পরামর্শ হচ্ছে, ‘‘মূল বিষয়টা আগেই বলেছি। ওটা হলে বাকি সব একটু কম সুন্দর হলেও সুন্দর হয়। সুন্দর স্টল কিংবা প্যাভিলিয়ন আর সেখানে শোভা পাচ্ছে, ‘গীতাঞ্জলী— এর চেয়ে বড়ো উপহাস আর হয় না।’’
ঢাকার বাইরে বাংলা একাডেমি বইমেলার আয়োজন করতে পারে কী না, এক্ষেত্রে কী কী উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করেন, ‘আমি (প্রশান্ত মৃধা) এ বিষয়ে মতামত দেবার ঠিক লোকটি নই।’
‘একুশের মেলায় এবার আপনার কী কী বই আসছে’ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পরিমার্জিত নতুন মুদ্রণসহ মোট চারটি বই বেরুতে পারে। প্রকাশনীগুলো যথাক্রমে- কথাপ্রকাশ, বেঙ্গলবুকস, নাগরী ও ইউপিএল।’
হা.শা./কেবি