ছবি: সংগৃহীত
শনিবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। সেখানে ফরিদা পারভীনকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন কনকচাঁপা।
কনকচাঁপা বলেন, ‘ফরিদা পারভীন আপা লালনগীতিতে যে জনপ্রিয়তা তৈরি করেছিলেন, সেই পুরো জায়গাটা শূন্য করে নিজের সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন। আধুনিক জীবনে আমরা যারা লালনগীতি শুনতাম, সেই জায়গা ফরিদা আপা সৃষ্টি করেছেন। যারা লালন সাইজির আখড়ায় গান করেন, তাদের গান একরকম। সেই গান ওই জায়গা থেকে তুলে এনে আধুনিকায়ন করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন তিনি।’
ফরিদা পারভীনের গান নিয়ে কনকচাঁপা আরও বলেন, ‘লালনগীতি ছাড়াও তার কণ্ঠে দেশের গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার গলার সুর ছিল তিরের মতো। তাঁকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যাচ্ছি। আল্লাহ তার এতটুকুই হায়াত রেখেছিলেন। কিন্তু উনার আরও দীর্ঘদিন বাঁচার দরকার ছিল আমাদের জন্য, বাংলাদেশের শ্রোতাদের জন্য, শিল্পীদের জন্য।’
একে একে ফরিদা পারভীনের মতো গুণী শিল্পীদের হারিয়ে নিজেকে অসহায় মনে করছেন কনকচাঁপা। তিনি বলেন, ‘সংগীতাঙ্গনে যারা আমাদের মাথার ওপর বটবৃক্ষের মতো ছিলেন, তাদের অনেককেই হারিয়ে ফেলছি। অসহায় হয়ে যাচ্ছি। যে ভরাট সংগীতাঙ্গন দেখে বড় হয়েছি, ঋদ্ধ হয়েছি; সেই অঙ্গনের অনেক মানুষকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে শোক প্রকাশ করছেন। তবে ভিন্ন চিত্রও আছে। তাকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য না করার অনুরোধ জানিয়ে কনকচাঁপা বলেন, ‘সাধারণ মানুষ নিজের সময়কে আনন্দময় করতে গান শোনেন। কিন্তু যখন একজন শিল্পী চলে যায়, তখন তারা পাপ-পূণ্য, বেহেশত-দোজখ—এসব নিয়ে এত কথা বলে! সেই মন্তব্যগুলো দেখলে আমরা ভীত হয়ে যাই। আমরা খুব ভেঙে পড়ি।'
তিনি বলেন, 'একটা মানুষ মাত্রই মারা গেল, এখনো তার মরদেহ দাফন করা হয়নি। এর মধ্যে শুরু হয়েছে কত নম্বর দোজখে যাবে, এমন আলাপ। যারা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন, তাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আমাদের শিল্পীদের এত পাপী ভাববেন না। শিল্পীরা একমাত্র জাতি যাদের কোনো ঘুষ খাওয়ার জায়গা নেই, দুর্নীতি করার জায়গা নেই, মিথ্যাচার ও অন্যায় করার জায়গা নেই।’
খবরটি শেয়ার করুন