সোমবার, ২৮শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি নেওয়া হবে দলগুলোর *** আগস্ট থেকেই শুরু পুলিশের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা *** ২০ বছর পর নিজের নাম লিখলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত নারী, সম্ভব করল মাথায় বসানো চিপ *** প্রথমবারের মতো এক বছরেই ৪০৯ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ শোধ *** স্বৈরাচার রুখতেই সংলাপে অংশ নিচ্ছি: সালাহউদ্দিন আহমদ *** জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আমেরিকার যুক্ততার অভিযোগ মিথ, বললেন সাবেক কূটনীতিক *** ১লা আগস্ট ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে উত্তরাঞ্চলের ৩ জেলা *** সাংবাদিকদের কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলার আহ্বান মির্জা ফখরুলের *** নির্বাচনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে সরকার, প্রশাসনে হবে রদবদল *** চাইলেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল করতে পারবে না ভারতীয় বোর্ড

ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৩৪ অপরাহ্ন, ২৮শে জুলাই ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক কিশোরকে (১৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজিত লোকজন গত শনিবার (২৬শে জুলাই) রাতে ও রোববার (২৭শে জুলাই) বিকেলে ওই কিশোরের বাড়িসহ সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের ১৪টি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আজ সোমবারও (২৮শে জুলাই) সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে। আবার কখন এসে কারা বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়, এ ভয়ে সংখ্যালঘু নারী-পুরুষ, শিশুরা আতঙ্কিত। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার কিশোর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী। বাড়ি গঙ্গাচড়ার বেদগাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে।

গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান গণমাধ্যমে বলেন, ওই কিশোর ফেসবুকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর লেখা ও ছবি দিয়েছে—এমন অভিযোগ পায় পুলিশ। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে রাত সাড়ে আটটার দিকে থানায় আনা হয়। পরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর তার বিচারের দাবিতে মিছিলসহ উত্তেজিত লোকজন তার বাড়ির সামনে যায়। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার আরেকটি মিছিল এসে কিশোরের এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে রাতে থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওসি আল এমরান বলেন, শনিবার রাত ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত পুলিশ ছিল। পরিস্থিতি শান্ত করার পর তারা চলে আসেন। রোববার জোহরের নামাজের পর হাজার হাজার লোক সেদিকে যাবেন—এমন খবর পেয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং তারা সেনাবাহিনীর সাহায্য চান। বেলা একটা থেকে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।

রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা বাড়িঘরে হামলা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর হয়। এতে পুলিশ সদস্যদের অনেকে আহত হয়েছেন। একজন কনস্টেবলকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আলদাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। সেখান থেকে ৫০০ গজ দূরে বাড়িঘরে হামলা করছে উত্তেজিত জনতা। কিছুক্ষণ পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৪টি বসতঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রমোদ মোহন্ত বলেন, গ্রামটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সীমানা এলাকা। দুপুরে গ্রামের পাশে কিশোরগঞ্জের বাংলাবাজার থেকে খিলালগঞ্জে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। গঙ্গাচড়া থানা-পুলিশ জানিয়েছিল, তারা শুধু মানববন্ধন করবে, তাদের বাড়ির দিকে আসবে না। কিন্তু বেলা তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা গঙ্গাচড়ার খিলালগঞ্জ বাজারে থেকে জড়ো হয়ে ওই কিশোরের গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ির দিকে স্লোগান দিতে দিতে আসে। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে খিলালগঞ্জ বাজারে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল উত্তেজিত লোকজন।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে খিলালগঞ্জ বাজারে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কথা বলতে যান গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা। তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। আমরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছি।’

জে.এস/

হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর সংখ্যালঘু নির্যাতন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন