ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গত ১৫ বছরে যে টাকা পাচার হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার। অধ্যাদেশ আকারে খুব শিগগির আইনটি হবে। সোমবার (১০ই মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অন্তর্বর্তী সরকার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করেছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সেই কমিটির তথ্য বলছে, ২০০৯ থেকে গত বছরের ৫ই আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়।’
তিনি জানান, ‘এর মধ্যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে। এই টাকা উদ্ধারের জন্য প্রথম থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়াস ছিল। প্রধান উপদেষ্টা প্রথম থেকেই বলে আসছেন, এটি তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের একটি। কারণ, এটি বাংলাদেশের মানুষের টাকা।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘এই টাকা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।’
এই টাস্কফোর্স ও অন্যান্য সংস্থা-প্রতিষ্ঠান পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে কে কী করছে, অগ্রগতি কতটুকু- তা নিয়ে সোমবার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে অনেকগুলো আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও টাস্কফোর্স কথা বলছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতেও এ আইনটি সহায়তা করবে। ২০০টি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে এখনো নির্বাচিত হয়নি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম আছে, এমন ৩০টির মতো আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হবে।’
এইচ.এস/