প্রতীকী ছবি
দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল সা. আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া শিখিয়েছেন। আর শুধু একটি দিবসে নয়, মা-বাবার জন্য দোয়া করুন সবসময়।
পৃথিবীতে প্রতিটি মা-বাবা শান্তি কামনা করে। তাদের জন্য তাই শান্তির দোয়া করতে হবে। মা-বাবার জন্য শান্তির দোয়া করা সন্তানের কর্তব্য। মা-বাবার অবদান ও ভূমিকার বদলা সন্তান জীবনেও আদায় করতে পারবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-
رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا উচ্চারণ: রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা। অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ২৪)
মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া করা
আল্লাহ তাআলা বাবা-মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দোয়াও শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি পবিত্র কোরআনে বলেন-
رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ উচ্চারণ : রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কিয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪১)
বাবা-মায়ের জন্য বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করার কোনো বিকল্প নেই। এছাড়াও প্রত্যেক মুনাজাতে বাবা-মায়ের নাম ধরে তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া বিশেষভাবে জরুরি।
মা বাবা যদি অসুস্থ হয়, তখন তাদের জন্য আরো বেশি দোয়া করা। হাদিসে এসেছে, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়াটি বলবে-أَسْأَلُ اللهَ العَظيمَ، رَبَّ العَرْشِ العَظِيمِ، أَنْ يَشْفِيَكَ উচ্চারণ: আসআলুল্লাহাল আজিমা, রাব্বাল আরশিল আজিমি, আঁইয়্যাশফিয়াক’
অর্থাৎ `আমি সুমহান আল্লাহ, মহা আরশের প্রভুর নিকট তোমার আরোগ্য (সুস্থতা) প্রার্থনা করছি। আল্লাহ তাকে সে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমজি, আবু দাউদ)
হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত আছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন বেদুঈনকে দেখতে গেলেন। যখন তিনি কোনো রোগীকে দেখতে যেতেন তখন বলতেন-لَا بَأْسَ طُهُوْرٌ اِنْشَاءَ اللهُ উচ্চারণ : লা- বা’সা তুহু-রুন ইনশাআল্লাহ।
অর্থ : ‘ভয় নেই, আল্লাহর মেহেরবানিতে আরোগ্য লাভ করবে ইনশাআল্লাহ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ যখন অসুস্থ হতো তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার ডান হাত রোগীর শরীরে বুলাতেন এবং বলতেন- اَذْهَبِ الْبَأْسَ رَبَّ النَّاسِ - وَاشْفِ اَنْتَ الشَّافِي - لَا شِفَاءَ اِلَّا شِفَائُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقْمًا উচ্চারণ: আজহাবিল বা’সা রব্বান না-সি, ওয়াশফি আনতাশ শা-ফি-, লা শিফাআ’ ইল্লা- শিফা-উকা শিফা-আ’ লা ইউগাদিরু সুক্বমা।
অর্থ : ‘হে মানুষের প্রতিপালক! এ রোগ দূর কর এবং আরোগ্য দান কর, তুমিই আরোগ্য দানকারী। তোমার আরোগ্য ব্যতীত কোনো আরোগ্য নেই। এমন আরোগ্য, যা বাকী রাখে না কোনো রোগ।’ (বুখারি, মিশকাত)
বাবা মার জন্য কোনো দিবসে নয়, বরং দোয়া করতে হবে সব সময়, প্রতিটি মুহূর্তে। তারা যদি আপনার প্রতি অন্যায়ও করেন তারপরও তাদের জন্য দোয়া করতে হবে। একদিন না একদিন ঠিকই তারা আপনার প্রতি দয়াপরবশ হবেন। এজন্য সবসময় তাদের জন্য দোয়া করে যাওয়া। নামাজের পর হাত ওঠালেই দোয়া পড়বেন, রব্বির হামহুমা কামা রব্বায়ানি সগিরা। একজন সন্তানের জন্য বাবা মায়ের দোয়া যেমন কবুল হয়, ঠিক তেমনই মা বাবার জন্য সন্তানের দোয়া কবুল হয়।