ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসা শেষে ছয় দিন পর বাসায় ফিরেছেন ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। রোববার (২৪শে আগস্ট) রাতে হাসপাতাল থেকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের বাসায় ফিরেছেন তিনি। গত রোববার মধ্যরাতে আহমদ রফিককে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহমদ রফিকের কিডনি-সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। তার ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত ছিল। আহমদ রফিকের সার্বক্ষণিক দেখভালের দায়িত্বে থাকা তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল কালাম মুঠোফোনে সুখবর ডটকমকে বলেন, যে অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সে তুলনায় স্যারের (আহমদ রফিক) অবস্থা এখন কিছুটা ভালো। তবে সার্বিকভাবে বললে, শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অবশ্য তিনি এখন কথা বলতে পারছেন।
আবুল কালাম জানান, স্যার (আহমদ রফিক) বাসায় ফেরার সময় ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ওষুধ দিয়েছে। আরও বলেছে, প্রতি বৃহস্পতিবার একজন ডাক্তার বাসায় এসে স্যারকে দেখে যাবেন। তিনি বলেন, ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্যার।
কবি ও বহুমাত্রিক লেখক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরে একটি ভাড়া বাসায় একাই থাকেন। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
আহমদ রফিকের স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে, তিনি নিঃসন্তান। নিজের লেখা ও সংগ্রহ করা বিস্তর বই ছাড়া সম্পদ বলতে তেমন কিছু নেই। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তার লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।
রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে আহমদ রফিক দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন তিনি। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পেয়েছেন ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।
আহমদ রফিকের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসছিল ২০১৯ সাল থেকেই। সে বছর চোখে অস্ত্রোপচার করলেও অবস্থার বেশি হেরফের হয়নি, ২০২৩ সাল থেকে প্রায় দৃষ্টিহীন। এ ছাড়া ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার পর থেকেই আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। এর মধ্যে দৃষ্টি হারানোর পর লেখালেখি বন্ধ হওয়ায় তিনি মানসিক কষ্টে আছেন।
অসুস্থ হয়ে পড়া গুণী এই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’। রোববার রাত আটটার দিকে এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান (চেক) আহমদ রফিকের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
খবরটি শেয়ার করুন