রবিবার, ৮ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাতির জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘অনাথ আশ্রমের’ সুবর্ণজয়ন্তীতে নানা আয়োজন

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:২০ অপরাহ্ন, ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জন্য নয়, হাতিদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ‘অনাথ আশ্রম’। এ খবর অনেক পুরনো। নতুন খবর হচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় গড়ে তোলা হাতিদের সেই ‘অনাথ আশ্রমের’ ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হয় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে।

এ উপলক্ষে গত রোববার (১৬ই ফেব্রুয়ারি) হাতিদের জন্য ফলের এক বিশাল ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। আশ্রমটি বিশ্বে এ ধরনের প্রাণীদের প্রথম সেবাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

‘অনাথ আশ্রম’টির নাম ‌‌‌‘পিন্নাওয়ালা এলিফ্যান্ট অরফানেজ’। পর্যটকদের কাছে এটি অন্যতম একটি আকর্ষণের জায়গা। গত রোববার এ আশ্রম প্রাঙ্গণ কলা, তরমুজ ও শসায় ভরে গিয়েছিল।

প্রতিদিন এ আশ্রমের হাতিগুলোকে নদীতে নিয়ে গোসল করানো হয়। রোববারও এদের গোসলের জন্য নদীতে নেওয়া হয়। আশ্রমে থাকা চার প্রজন্মের হাতি নিকটবর্তী মহা-ওয়া নদীতে গোসল করে। সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনে আমন্ত্রিত কয়েকজন কর্মকর্তা এবং পর্যটককে দুধভাত ও শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি পরিবেশন করা হয়।

আশ্রমটির প্রধান কিউরেটর সঞ্জয়া রত্নানায়েকে বলেন, ‘১৯৮৪ সালে এ অনাথ আশ্রমে প্রথম হস্তীশাবকের জন্ম হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭৬টি হাতির জন্ম হয়েছে।’ তিনি এ উদ্যোগকে একটি সফল প্রজনন কর্মসূচি বলেও উল্লেখ করেন।

সঞ্জয়া রত্নানায়েকে আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের এখানে চার প্রজন্মের হাতি রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ছোটটির বয়স ১৮ মাস ও বড়টির বয়স ৭০ বছর।’

২০২১ সালের আগস্টে আশ্রমটিতে প্রথমবারের মতো যমজ হস্তীশাবক জন্ম নেয়। এশীয় হাতির ক্ষেত্রে যমজ শাবক জন্মানোর ঘটনা বিরল। দুটো হস্তীশাবকই ভালো আছে।

১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাতির ‘অনাথ আশ্রম’টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর দুই বছর আগে থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেনটোটার একটি ছোট সেবাকেন্দ্রে পাঁচটি অনাথ হাতিকে লালন–পালন করা হচ্ছিল।

রত্নানায়েকে বলেন, ‘১৯৭৫ সালে পিন্নাওয়ালায় একটি নারকেলবাগানে আশ্রমটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই প্রাণীরা বিচরণের জন্য আরও বেশি জায়গা ও ভালো পরিবেশে পায়। আশপাশের এলাকায় তখন প্রচুর খাবারও পাওয়া যেত।’

হাতিদের ক্ষুধা মেটাতে এ আশ্রমে ১৪ হাজার ৫০০ কেজি নারকেল, পাম ও অন্যান্য গাছের পাতার প্রয়োজন হয়।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার (৫৬ মাইল) পূর্বে আশ্রমটির অবস্থান। সেখানকার কর্তৃপক্ষ হস্তীশাবকদের জন্য টন টন ফল ও দুধও কিনে রাখে। বিদেশি ও স্থানীয় দর্শনার্থীদের কাছে হস্তীশাবকগুলো খুব পছন্দের।

এ আশ্রম শ্রীলঙ্কার রাজস্ব আয়েরও অন্যতম বড় উৎস। সেখান থেকে প্রতিবছর প্রবেশ ফি হিসেবে লাখ লাখ ডলার আয় হয়। দর্শনার্থীরা দূর থেকে হাতিদের দেখতে পারেন, কাছেও আসতে পারেন। স্নানের সময় হাতিদের গা ঘষতে সাহায্য করতে পারেন তারা।

২০ বছর আগে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ দেশের দক্ষিণে আরেকটি হাতির আশ্রম খোলে। সেখানে অনাথ, পরিত্যক্ত বা আহত হাতিদের যত্ন নেওয়া হয় এবং পরে এদের বনে ফেরত পাঠানো হয়।

হা.শা./ আই.কে.জে


অনাথ আশ্রম

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন