বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** এই সরকারের এক্সিট পলিসি চিন্তা করার সময় এসেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য *** জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেবে নয়াদিল্লি *** ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চান দেশটির ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক *** এক সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে *** তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগ রাষ্ট্রপতির হাতে রাখার প্রস্তাব *** ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল দিচ্ছেন উমামা, যোগদানের আহ্বান ফেসবুকে *** ১৫ই আগস্টের মধ্যে চাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা *** ‘প্রিয় বন্ধু’ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের *** আইন ও বিচার বিভাগে পদায়ন বিধিমালা জারি *** এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন ছাত্রদলের

কপ সম্মেলন: ধনী দেশগুলো থেকে অর্থ প্রাপ্তিই মূল চ্যালেঞ্জ

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, ১৩ই নভেম্বর ২০২৪

#

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে শুরু হয়েছে কপ-এর ২৯তম সম্মেলন। ১১-১৪ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত এবারের কপ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনিসহ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলে দেশের অন্তত ২৯টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা যোগদান করেছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ নয়টি দল তৈরি করেছে। এই দলগুলো জলবায়ু, অর্থনীতি, ক্ষয়-ক্ষতি, প্রশমন (কমানো) এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলার (অভিযোজন) মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। এবারের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষতি ও ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

কপ সম্মেলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়ের নাম হলো ‘ইউনাইটেড নেশন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (ইউএনএফসিসিসি)। এটি ১৯৯২ সালে ১৫৪ দেশের স্বাক্ষর হওয়া একটি চুক্তি, যার উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনা ও একসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা। এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ ও অঞ্চলগুলো কপ সম্মেলনে অংশ নিয়ে থাকে। যা কপ শব্দটির পূর্ণরূপ (কনভেনশন অব কনফারেন্স অফ দ্য পার্টিস)। এই সম্মেলনে জলবায়ু বিষয়ে আলোচনা, এ নিয়ে লক্ষ্য অর্জনের অগ্রগতি মূল্যায়ন ও এর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে। জার্মানির বার্লিন শহরে ১৯৯৫ সালে প্রথম কপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে এই সম্মেলন বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, জলবায়ুর চলমান পরিবর্তনের প্রভাবে ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে যাবে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে একবিংশ শতাব্দী শেষে বিশ্ব থেকে বাংলাদেশসহ অন্তত ৪৩টি দেশ সমুদ্রপৃষ্ঠে হারিয়ে যাবে। অথচ যেসব দেশ এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী, তারা সবসময় নির্বিকার। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও রাশিয়া পৃথিবীব্যাপী ৫৫ শতাংশের বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে। অন্যদিকে, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর দায় একেবারেই নগণ্য। বাংলাদেশের দায় এক্ষেত্রে মাত্র ০.৪৭ ভাগেরও কম। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তের দিক থেকে এসব দেশই প্রথম তালিকায়।

গত কয়েক বছর ধরেই নতুন অর্থায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিল জাতিসংঘ। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই লক্ষ্য চূড়ান্ত অপেক্ষায় আছে। এ কারণেই এবারের সম্মেলনে অর্থায়নকে শীর্ষ এজেন্ডা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এবারের কনফারেন্স অব দ্য পার্টি (কপ) হচ্ছে অর্থায়নের কপ। ফলে সবার দৃষ্টি কপ-২৯-এর দিকে। এই এজেন্ডা নিয়েই এবছর জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী চলমান জলবায়ু সংকট মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক উৎস থেকে উন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ৫০০ বিলিয়ন থেকে এক ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। যা উন্নত দেশগুলোর বর্তমান প্রতিশ্রুতির চেয়ে কমপক্ষে পাঁচগুণ বেশি।

আগামী বছর থেকে এই লক্ষ্য কার্যকর করার কথা। আবার এই অর্থের উৎস নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। বর্তমানে বেশির ভাগ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে বেসরকারি খাত ও বহুপক্ষীয় ব্যাংক থেকে। আর এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে ঋণ হিসাবে। এবারের সম্মেলনে আয়োজক দেশ আজারবাইজান দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবিলায় ১০০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠনের কথা বলেছেন।

এবারের সম্মেলনে মূল লক্ষ্যই ছিল ধনী দেশগুলোর থেকে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য অর্থের বন্দোবস্ত করা। কিন্তু এবারের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি ধনী দেশের সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করেননি। তাহলে সম্মেলনের মূল লক্ষ্য যে ধনী দেশগুলো থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তি, সেটা বাস্তবায়নই চ্যালেঞ্জ হবে।

আই.কে.জে/

কপ সম্মেলন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন