মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি *** তরুণ-তরুণীদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ দেবে সরকার *** শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার, ফিরছেন ক্লাসে *** চীন সফরে যাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প *** তেলাপোকা মারতে গিয়ে পুরো অ্যাপার্টমেন্টেই দিলেন আগুন *** এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ *** সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি *** জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ো না—এনসিপি নেতাদের গোলাম পরওয়ার *** দীপাবলিতে ভারতীয়দের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশি হাইকমিশনের ভিডিও প্রকাশ *** ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তথ্য প্রকাশ, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দরিদ্র মুসলিম পরিবার থেকে আসা সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিশুশিল্পী, অতঃপর...

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৩০ অপরাহ্ন, ২১শে অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের ঝলমলে দুনিয়ায় বহু তারকা রয়েছেন, যাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল অল্প বয়সেই। কেউ নিজের প্রতিভায় পৌঁছে গেছেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এমনই এক শিল্পীর নাম কুমারী নাজ, যিনি একসময় ছিলেন ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিশুশিল্পী।

অভিনয়, ডাবিং, কিংবা কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতের মুখ—সব জায়গায় ছাপ রেখে গেছেন তিনি। কিন্তু তার জীবনের পর্দার আড়ালের গল্প ছিল একেবারেই অন্য রকম—অবহেলা, দারিদ্র্য আর বেদনায় ভরা। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম।

১৯৪৪ সালের ২০শে আগস্ট, মুম্বাইয়ে জন্ম নাজের। দারিদ্র্য আর মায়ের লোভ তাকে খুব ছোট বয়সেই সিনেমায় ঠেলে দেয়। মাত্র চার বছর বয়সে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। ১৯৫০ সালের ‘আচ্ছা জি’ ছবির মাধ্যমে শুরু হয় তার যাত্রা। পরের কয়েক বছরেই হয়ে ওঠেন বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া শিশু তারকা। দর্শকদের প্রিয় হয়ে ওঠেন ‘বেবি নাজ’ নামে।

‘গুনাহ’, ‘রুপাইয়া’, ‘শমা পরওয়ানা’—প্রতিটি ছবিতেই তার মিষ্টি হাসি আর সরল অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিল পুরো দেশ। কিন্তু আলোঝলমলে পর্দার আড়ালে ছিল অবহেলা আর ক্লান্তি। পরিবার চালানোর ভার, মায়ের কড়া নিয়ন্ত্রণ—সব মিলিয়ে শিশু বয়সেই নাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজের শৈশব।

শিশুশিল্পী হিসেবে সাফল্যের পর নাজ প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রেও খ্যাতি পান। ‘গঙ্গা যমুনা’, ‘দেবদাস’, ‘কাগজ কে ফুল’, ‘মুসাফির’-এর মতো গম্ভীর ছবিতে অভিনয় করেন।

কিন্তু সবচেয়ে বেশি মনে রাখার মতো কাজ ছিল ১৯৭০ সালের ‘সাচ্চা ঝুঠা’ ছবিতে, যেখানে তিনি ছিলেন রাজেশ খান্নার প্রতিবন্ধী বোনের ভূমিকায়। তার সংবেদনশীল অভিনয় দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়, আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় উপাধি—‘বলিউডের প্রিয় বোন’।

সময় বদলাতে থাকলেও নাজের প্রতিভা হারিয়ে যায়নি। পরবর্তী সময়ে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ডাবিং শিল্পী। ১৯৮০-এর দশকে যখন দক্ষিণের অভিনেত্রী শ্রীদেবী হিন্দি ছবিতে প্রবেশ করেন, তার কণ্ঠের জন্য তখন নাজের সাহায্য নেওয়া হয়। 

‘হিম্মতওয়ালা’, ‘তোহফা’, ‘মাওয়ালি’—এসব হিট ছবিতে শ্রীদেবীর সংলাপের পেছনে ছিল নাজের কণ্ঠ। তার স্বচ্ছ, নির্ভেজাল কণ্ঠ শ্রীদেবীর চরিত্রে এনে দিয়েছিল এক অনন্য মাধুর্য।

১৯৬৩ সালে নাজ বিয়ে করেন অভিনেতা সুব্বিরাজকে, যিনি রাজ কাপুরের কাজিন। বিয়ের পর তিনি ধর্ম বদল করে নাম নেন অনুরাধা। ধীরে ধীরে সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন, কিন্তু ডাবিংয়ের জগতে কাজ চালিয়ে যান।

জীবনে একসময় ২০০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেন—কখনো শিশু তারকা, কখনো চরিত্র অভিনেত্রী, কখনো আবার অদৃশ্য কণ্ঠস্বর হয়ে।

নাজ ছিলেন সেই বিরল ভারতীয় শিল্পীদের একজন, যিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছিলেন। কিন্তু জীবনের শেষ দিকে তার শরীরে বাসা বাঁধে লিভার ক্যানসার। ১৯৯৫ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন, দীর্ঘ চিকিৎসার পর কোমায় চলে যান এবং ১৯ অক্টোবর ১৯৯৫ সালে মাত্র ৫১ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান তিনি।

জে.এস/

বলিউড অভিনেত্রী কুমারী নাজ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250