ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। দ্বিতীয় দফায় তার দায়িত্ব গ্রহণের এখনো দুইমাস পূর্ণ হয়নি। ট্রাম্প এবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমেরিকার বিদেশনীতি নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বে। এর মধ্যে তিনি অনেক দেশে ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় আমেরিকার আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
যোগাযোগ করলে আমেরিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সভাপতি এম হুমায়ুন কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমেরিকার প্রথাগত মিত্র যারা আছে, যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো, কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের একটি পুনঃবিন্যাস ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় আমলে ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’
এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন আসছে, ট্রাম্পের আমলে বাংলাদেশ–আমেরিকার সম্পর্ক কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার সাবেক উপরাষ্ট্রদূত জন এফ ডেনিলোভিচ বলেন, ‘বিষয়টি বলার মতো সময় এখনো আসেনি। আর আমেরিকার ক্ষমতার সবকিছুই প্রেসিডেন্টের হাতে নয়। কংগ্রেসসহ আরও কিছু বিষয় সেখানে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব নীতি গ্রহণ করেছেন, সেগুলোর বেশিরভাগই আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নীতি এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেই বিবেচনায় নিয়ে করা হয়েছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তেমন যোগসূত্র নেই।’
ঢাকায় সফররত আমেরিকার সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, ‘ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের বিষয়টি মূলত আমেরিকার অভ্যন্তরীণ। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোনো যোগ নেই। অভ্যন্তরীণ কারণেই সীমান্ত নিরাপদ রাখতে অভিবাসননীতি নেওয়া হয়েছে। কাজেই আমেরিকার নতুন এসব নীতি ও পদক্ষেপের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে লক্ষ্যে রেখে বা বাংলাদেশের জন্য নয়।’
সাবেক এই উপরাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে উগ্রবাদ ও সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অনেক অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশে উগ্রবাদ ও সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সমালোচনাগুলোকে সত্য দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। মিথ্যাকে মিথ্যা দিয়ে নয়, সত্য দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।’
‘ডিপ স্টেট’ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে জন এফ ডেনিলোভিচ বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় নীতি নিয়ে কাজ করার জন্য যদি বিভিন্ন পদ্ধতি নেওয়া হয়, সেটা ডিপ স্টেট নয়, সেটা রাষ্ট্রের নীতি। এ নিয়ে বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশে অনেক অপতথ্য আছে।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনে আমেরিকা সহযোগিতা করেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা নাকচ করে দিয়েছেন—দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি ভালো ইঙ্গিত। বাংলাদেশের জন্য আমেরিকার সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি মনে করেন, ‘এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্ক চ্যারিটি (দান–খয়রাত) নয়। আমেরিকা কিংবা চীন—সব দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়। সম্পর্ক আরও উন্নত হলে দুই দেশ থেকেই বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ আসবে। গণতান্ত্রিক দুর্বলতায় এত দিন যা কাজে আসেনি। গণতান্ত্রিক ও মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আমেরিকার উদ্যোক্তাদের আরও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’
এইচ.এস/