আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নজিরবিহীনভাবে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আসিম মুনিরকে। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ওয়াশিংটন গেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির। তার এ সফর ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে আসিম মুনিরের এ সফর নজিরবিহীনও বটে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় আজ বুধবার (১৮ই জুন) হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে স্বাগত জানাবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের সরকারি সময়সূচিতে এ বৈঠকের উল্লেখ রয়েছে। এ বৈঠক হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট কক্ষে হবে এবং সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
বিবিসি জানায়, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ টেলিফোনে তাদের আলোচনা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি তাদের আলোচনার সময়ে ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘর্ষ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন।
ইসলামাবাদে সেনাপ্রধানের সফরকে বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, চলতি মাসের শুরুতে ভারতের একটি প্রতিনিধিদল আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে দেখা করে। ভারতীয় গণমাধ্যম সেটিকে বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে।
তখন পাকিস্তানি প্রতিনিধিরা এমন কোনো বৈঠক করতে পারেননি বলে তুলনা করা হচ্ছিল। এবার হোয়াইট হাউস থেকে মুনিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় ইসলামাবাদে এটিকে ভারতীয় প্রচারণার জবাব হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
গত মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার আকাশপথে লড়াইয়ের পর এ ঘটনা পাকিস্তানের কূটনীতির জন্য বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সংঘর্ষে দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেনাপ্রধান মুনির এখন পাঁচদিনের সরকারি সফরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন।
গত (১৬ই জুন) সোমবার রাতে ওয়াশিংটনের জর্জটাউন এলাকায় ফোর সিজনস হোটেলে প্রবাসী পাকিস্তানিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন মুনির। সেখানে তিনি ভারতীয় দাবি জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। পেহেলগাম হামলার পেছনে পাকিস্তান রয়েছে—এমন অভিযোগকে তিনি ‘ভারতীয় আগ্রাসনের অজুহাত’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত লঙ্ঘনের মাধ্যমে একটি বিপজ্জনক ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ গড়তে চায়। পাকিস্তান তা কখনোই মেনে নেবে না। বরং শহীদ হওয়াকে শ্রেয় মনে করবে।
হোটেলে মুনিরকে ফুল ছিটিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। তার প্রশংসায় স্লোগান দেন উপস্থিতরা। তবে হোটেলের বাইরে ছিল বিরোধী দল পিটিআইয়ের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ। তারা দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কার ও বন্দী নেতাদের মুক্তির দাবি জানান। তাদের কণ্ঠ হোটেলের ভেতরে পৌঁছায়নি।
বক্তব্যে সেনাপ্রধান মুনির আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরানকে ‘পরিষ্কার ও শক্ত সমর্থন’ দিচ্ছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে আমেরিকার প্রচেষ্টাকেও সমর্থন জানায় ইসলামাবাদ। মুনির বলেন, ‘আমরা চাই এ যুদ্ধ এখনই থেমে যাক।’
খবরটি শেয়ার করুন