ছবি: সংগৃহীত
মৌমাছিকে ভয় পায় সব প্রাণী। আর সেই মৌমাছির সঙ্গে একই বাড়িতে দীর্ঘ সাত বছর ধরে বসবাস করছেন কৃষক আলমগীর হোসেন (৪৫)।
বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও এমনই চিত্র যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খানপুর সরদারপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের বাড়িতে। দোতলা বাড়ির বারান্দা, বেলকুনি, সানসেট, দেয়ালসহ বিভিন্ন প্রান্তে বাসা বা চাক বেঁধে বসবাস করছে মৌমাছি। তার এ বাড়িতে মৌচাকের সংখ্যা ২২টি। এই বাড়িতে কয়েক লাখ মৌমাছির সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর পার করছেন আলমগীরের পরিবারের সদস্যরা। তারা কখনো মৌমাছির আক্রমণের শিকার হননি। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চিত্র ফুটে উঠেছে মৌমাছি এবং এই পরিবারটির মধ্যে।
কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, এই মৌমাছিগুলো আমাদের পরিবারের অংশ। তাদের কখনও আমরা ক্ষতি করি না বা ক্ষতি হতে দেই না। তেমনি এই লাখ লাখ মৌমাছিও আমাদের পরিবারের সদস্য বা প্রতিবেশীদের কখনও আক্রমণ করেনি। আমার বাবা বেশিরভাগ সময় তাদের দেখাশোনা করে। তাছাড়া আমার মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের অন্যরাও তাদের দেখভাল করে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর কার্তিক মাসে এ মৌমাছির দল আমাদের বাড়িতে এসে হাজির হয় এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের দিকে চলে যায়। মৌমাছিগুলো যখন চলে যায় আমাদের মনটাও খুব খারাপ হয়ে যায়। আমরা তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় আবার দিন গুনি।
আরো পড়ুন : ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ
মৌচাকগুলো থেকে মধু সংগ্রহের বিষয়ে কৃষক আলমগীর বলেন, প্রতি বছর মৌচাক থেকে আমরা তিনবার মধু সংগ্রহ করি। ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে আমরা এই খাঁটি মধু বিক্রি করে থাকি। প্রতিবার আমরা প্রায় এক মণ (৪০ কেজি) করে মধু সংগ্রহ করি। বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।
কৃষক আলমগীর হোসেনের বাবা ইসাহাক আলী বলেন, সাত বছর আগে বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি গাছে মৌমাছি চাক বেঁধেছিল। গাছের নিচে বাঁধা ছিল কৃষক আলমগীরের তিনটি গরু। হঠাৎ মৌমাছিরা ওই গরুগুলোকে আক্রমণ করে। এ সময় প্রতিবেশীরা মৌমাছির চাকটিকে পুড়িয়ে দিতে বলেন। তবে চাক পোড়ায়নি আলমগীর হোসেন। এরই কিছুদিন পর মৌমাছিরা এসে আলমগীরের বাড়িতে প্রথম সাতটি চাক বেঁধে বসবাস শুরু করে।
আলমগীরের ফুফু আছিয়া খাতুন ও প্রতিবেশী ওলিয়ার রহমান বলেন, প্রথম দিকে কামড়ানোর ভয় পেলেও এখন আর ভয় করে না। কেননা মৌমাছি আমাদের কাউকে আক্রমণ করে না। কামড়ায়ও না। আমরাও কখনও ওদের ক্ষতি করি না।
এস/ আই.কে.জে