সোমবার, ২০শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** পাকিস্তান দেখাল কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ডিল’ করতে হয় *** দেশে লাগাতার অগ্নিকাণ্ডে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে সরকারের কোর কমিটি *** নাহিদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল জামায়াত *** প্রথম আলোর আলোচনায় জুলাই সনদ *** আলোচনা-সমালোচনায় কবি-সাংবাদিক আলতাফ, সহকর্মীরা প্রতিবাদমুখর, সরব নারীনেত্রীরা *** জামায়াত সম্পর্কে কী এনসিপির নতুন উপলব্ধি *** খালেদা জিয়ার সংসদ নির্বাচনের প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যা জানাল বিএনপি *** একের পর এক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জরুরি বৈঠক *** জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কর্মসূচি *** আন্দোলনের জবাবে ট্রাম্প বললেন, ‘আমি রাজা নই’

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, ১৭ই অক্টোবর ২০২৫

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সারা বিশ্বের গণমাধ্যম ব্যস্ত মুক্ত ইসরায়েলি বন্দী, মুক্ত ফিলিস্তিনি বন্দী ও তাদের পরিবারের গল্প তুলে ধরতে। তবে এসব সংবাদ তারা যুদ্ধের মূল কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করছে, কারণ, ইসরায়েল এখনো বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ কর্তারা বলছেন, নিকট ভবিষ্যতেও এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির গ্লোবাল নিউজ ডিরেক্টর ফিল চেটউইন্ড বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বাধীন গণমাধ্যমকে দূরে রাখা বা তাদের টার্গেট করা হলে বুঝতে হবে এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে। আমাদের বলা হচ্ছে—এটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু সাংবাদিকেরা গত ১০০ বছর ধরে যুদ্ধ কাভার করছেন, ঝুঁকি নিতে তারা প্রস্তুত। তারপরও গাজায় সাংবাদিক প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ, তারা যুদ্ধ ও সামরিক অভিযানের পূর্ণ চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে আসতে দিতে চায় না।’

চেটউইন্ড বলেন, ফিলিস্তিনি সাংবাদিকেরা অসাধারণ কাজ করছেন। কিন্তু এএফপির পুরো গাজা টিমকে এক বছরেরও বেশি আগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তারা আবারও গাজায় ফিরে যেতে চান। নতুন চোখে মাঠের বাস্তবতা দেখা দরকার।

গত দুই বছরে ইসরায়েল শুধু ‘এম্বেডেড’ বা সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে সাংবাদিকদের গাজায় ঢোকার অনুমতি দিয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পর কিছু ব্রিটিশ গণমাধ্যম—যেমন বিবিসি ও চ্যানেল-৪ নিউজ এসব সীমিত কাভারেজে অংশ নেয়। কয়েকজন মার্কিন সাংবাদিকও অনুরূপ অনুমতি পেয়েছিলেন।

তবে এই প্রবেশাধিকার ছিল খুবই সীমিত। এবিসি অস্ট্রেলিয়ার একটি টিম ২০২৫ সালের আগস্টে বারবার আবেদন করার পর অবশেষে সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ গাজার কেরেম শালোম সাহায্যকেন্দ্র সফরের সুযোগ পায়।

এবিসি অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথিউ ডোরান তার প্রতিবেদনে লেখেন, এই সফরগুলো ‘অত্যন্ত পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত’ ছিল। তবু তিনি সফরে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি দেখতে চেয়েছিলেন, গাজার জনগণকে সাহায্য করার নামে ইসরায়েল আসলে কী করে, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ও বিশ্বনেতারা প্রশ্ন তুলেছেন।

ডোরান বলেন, ‘আমাদের সেই ছোট দলে ছিলেন এক ইসরায়েলি গণমাধ্যম প্রতিনিধি, এক লেখক ও কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। তারা মূলত ইসরায়েলপন্থী বার্তা ছড়িয়ে দিতে আগ্রহী ছিলেন।’

গত দুই বছরে বিভিন্ন সংস্থা গাজায় সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেরুজালেমের ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ) ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টে নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছে।

গত ১১ই সেপ্টেম্বর সংস্থাটি জানায়, তারা এক বছর আগে দ্বিতীয় পিটিশন জমা দিয়েছিল, কিন্তু আদালত সরকারের অনুরোধে বারবার শুনানি পিছিয়ে দিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’ ও ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) এ বিষয়ে একাধিক আবেদন করে। তারা একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ড বন্ধেরও দাবি তুলেছিল। কিন্তু কোনো আবেদনেই কাজ হয়নি।

সিপিজের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় অন্তত ১৯২ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন সাংবাদিককে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করা হয়েছে বলে সিপিজের ধারণা। সংস্থাটি বলেছে, এটি সাংবাদিকদের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।

জে.এস/

যুদ্ধবিরতি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250