শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** অন্যের ওপর দোষ চাপানো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অভ্যাস’: ভারত *** পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধানের *** মানচিত্র থেকে পাকিস্তানকে মুছে ফেলার হুমকি দিলেন ভারতের সেনাপ্রধান *** ফ্লোটিলা বহর আটকের তীব্র নিন্দা জানাল বাংলাদেশ *** ভারতের ধনী নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৫০১৭০ কোটি নিয়ে শীর্ষে জয়শ্রী, ষষ্ঠ বলিউড নায়িকা *** ২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল ট্রাইওন্ডা আসলে কী *** যেভাবে আসামে হিন্দু-মুসলিম বিভাজিত সমাজে ঐক্যের সুর হয়ে উঠলেন জুবিন গার্গ *** ফ্লোটিলার সর্বশেষ জাহাজটির বর্তমান অবস্থান, স্টারলিংকের ইন্টারনেট এখনো সচল *** মাথা ঠান্ডা করে আরামে ঘুমান, নিজেদের সমস্যায় মন দিন—পশ্চিমা নেতাদের পুতিন *** বাড়লে গরম, বাড়ে চিনি খাওয়াও—বিস্ময়কর তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা

মহামারি ও দুর্যোগ নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গান

সাহিত্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

রবিউল হক

আমাদের সমাজের নানা সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য গান। যেমন- ম্যালেরিয়া, মহামারি, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রসঙ্গে অসংখ্য গণসংগীত রচিত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গণশিল্পীদের দৃষ্টি ছিল, কোথায় মানবিকতার গলদ, কোথায় মুক্তি ও ন্যায়নীতি। সেবকের ভূমিকায় তারা রচনা করেছেন দুর্যোগ মোকাবেলার গান। দুর্যোগের সাথে এই অঞ্চলের মানুষের প্রতিনিয়ত বসবাস। মৌসুমী বায়ুর কারণে বন্যা-জলোচ্ছ্বাস, কাল-বৈশাখীর ঝড়, নদী-ভাঙন ইত্যাদি ষড়ঋতুর এই দেশে কোন না কোন সময়ে লেগেই থাকে। ১৯৭০ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে এমনই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে যায়।  এই দুর্যোগে ১২ লক্ষ কিংবা তারও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বহি:বিশ্ব থেকে আশার বাণী শোনা গেলেও তৎকালীন সরকারের ভূমিকা ছিল একেবারে নীরব। এ অবস্থায় সারা দেশের মানুষ শোকে যেমন পাথর হয়ে গিয়েছিল ঠিক তেমনি ঘৃণা ও ক্রোধের মাত্রাও বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে সংগীত শিল্পীরা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিল। জনৈক বিশিষ্ট শিল্পীর মতে, তখনকার বেশ কিছু গণসংগীতে শোক ও বেদনার মসৃণ সুরে বাংলার আপামর জনগণ স্বজন হারানোর শোকে একসাথে গলা মিলিয়ে কেঁদেছেন। আবার অন্যদিকে মুক্তিপাগল দামাল ছেলের কিষাণের সুরও এতে পাওয়া যায়। সে সময় প্রেসক্লাব এক পথমিছিলের আয়োজন করেছিল। মিছিলে ঢাকার জনগণ যেভাবে সাড়া দেয় তা ছিল স্মরণীয়। ঢাকার ইসলামপুর এবং চকবাজার এলাকার অধিবাসীরা দোকান থেকে সোনার চেন ছুঁড়ে  দিয়েছিল মিছিলের লালসালুতে।

এই মিছিলে আলতাফ মাহমুদ- এর লেখা ও সুর করা একটি গান বারবার গাওয়া হয়েছিল। আর তা হলো-

আরো পড়ুন : সংগীতের উৎপত্তি

‌‘কাঁদো বাংলার মানুষ আজিকে কাঁদো

কাঁদো কাঁদো ভাই-বোন

সোনার দেশের সোনার মানুষ

হারিয়ে গেছে হায়

এসো দুঃখের অগ্নিবাণে

জমাট ব্যথার ঘূর্ণিটানে

ধনের পাহাড়ে অনড় মহলে

কাঁপন লাগিয়ে যাই… কাঁদো…’।।

বানিয়াচঙে একবার ভয়াবহ ম্যালেরিয়া ও মহামারি দেখা দেয়। কয়েকদিনের মধ্যে দশহাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। হেমাঙ্গ বিশ্বাস তখন ভাটির সুরে লিখলেন-

‘বানিয়াচঙের প্রাণবিদারী ম্যালেরিয়া মহামারি

হাজার হাজার নরনারী মরছে অসহায়।

ভারতবর্ষের সেরা গ্রাম হাজার লোকের ধাম

তাহার আজ কী পরিণাম দুঃখে মরি হায়’।

জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের ‘নবজীবনের গান’ – এর একটি অংশে ম্যালেরিয়ার  ঘটনা বর্ণনা করে এক নাটকীয় চরিত্রের মতো। গানটি হলো-

‘দেখছ কি সবই উজাড় হোলো।

(আহা) ম্যালেরিয়ার দেশ ছাইল

(আহা) মহারোগে দেশ ছাইল

দেখছ কি সব উজাড় হোলো।

এককালে সব ঘরে ঘরে

ছিল প্রাণের হাসি

এখন ঘরের লোককে চিতায় তুলে

হলেম শ্মশানবাসী।

ভেঙে গেল সোনার হাটে প্রাণের মেলা দেখছ কি

দেখছ কি সবই উজাড় হোলো’।।

রবিউল হক, লোক গবেষক ও শিল্পী

এস/ আইকেজে

গান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250