২০২২ সালে চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর থেকে এআইয়ের পছন্দের কিছু নির্দিষ্ট শব্দের ব্যবহার মানুষের কথাবার্তায় বেশি দেখা যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। বিশেষ করে চ্যাটজিপিটির মতো বড় ভাষা মডেল (এলএলএম) মানুষের দৈনন্দিন কথাবার্তার ধরন বদলে দিচ্ছে এবং একঘেয়ে করে তুলছে বলে সতর্ক করেছে জার্মানির এক গবেষক দল। তথ্যসূত্র দ্য রেজিস্টারের।
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের গবেষক দলের দাবি, ২০২২ সালে চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর থেকে এআইয়ের পছন্দের কিছু নির্দিষ্ট শব্দের ব্যবহার মানুষের কথাবার্তায় বেশি দেখা যাচ্ছে। গবেষণাটি এখনো পিয়ার-রিভিউ হয়নি। তবে তারা বলছেন—এই প্রবণতা ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
গবেষকদের তথ্যমতে, ‘কমপ্রিহেন্ড’ (অনুধাবন করা), ‘বোস্ট’ (গর্ব করা), ‘সুইফট’ (দ্রুত), ‘মেটিকুলাস’, (পুঙ্খানুপুঙ্খ বা নিখুঁত), ডেলভ’ (গভীরে অনুসন্ধান করা) এর মতো শব্দ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ডেলভ শব্দটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। এসব শব্দকে বলা হচ্ছে ‘জিপিটি শব্দ’। ইউটিউবের ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৫টি একাডেমিক ভিডিও এবং ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৯১টি পডকাস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ শব্দগুলোর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
গবেষণাটি মূলত এ শব্দগুলোর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণেই সীমাবদ্ধ থাকলেও গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন—‘এআই কি নিজস্ব একধরনের সংস্কৃতি তৈরি করছে, যা আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে?’ গবেষকরা বলেছেন, ‘মানুষে-মানুষে সরাসরি কথোপকথনে এলএলএমের পছন্দের শব্দগুলোর ব্যবহার বাড়া ইঙ্গিত দেয়, এর পেছনে হয়তো কোনো গভীর জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া কাজ করছে।’
তবে তারা স্বীকার করেছেন, এই শব্দগুলো কীভাবে মানুষের ভাষায় ঢুকে পড়ছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। গবেষকদের মতে, মানুষ ও এআইয়ের কথাবার্তার এ আদান-প্রদান ভবিষ্যতে ভাষার ব্যবহারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে একসময় তৈরি করতে হতে পারে একটি ‘বন্ধ সাংস্কৃতিক প্রতিক্রিয়া চক্র’। এ চক্রে মানুষ ও মেশিনের মধ্যে সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য আদান-প্রদান হতে হতে একসময় সেটা একরকম ঘুরেফিরে একই রকম হয়ে যেতে পারে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন