রবিবার, ২০শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ব্রহ্মপুত্রের উজানে চীনের বাঁধ নির্মাণ শুরু, ভারত-বাংলাদেশের উদ্বেগ *** তারেক রহমানের কথামতো জামায়াতের আমিরকে দেখতে এসেছি: মির্জা ফখরুল *** ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল *** গোপালগঞ্জে স্বাভাবিক হচ্ছে জীবন, কাটছে আতঙ্ক *** বাসায় ফিরেছেন অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের বাবা *** রাজনৈতিক দলকে সেনাবাহিনীর বাস সরবরাহের দাবি নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল আইএসপিআর *** শ্রীলঙ্কাকে ৫ গোলে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে বাংলাদেশ *** অন্তর্বর্তী সরকার কী আদৌ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে, প্রশ্ন তারেক রহমানের *** তৃতীয় লিঙ্গের নেহা নামে ভারতে দুই দশক, তিনি ‘বাংলাদেশের আব্দুল’ *** আমি বর্তমানেই আছি, আপনারা নেই: সাংবাদিকদের লিটন

৩৯ বছর পর্যন্ত পড়তেই জানতেন না, তার বই এখন বেস্টসেলার

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, ১৯শে জুলাই ২০২৫

#

ক্যারেন উডসের লেখা ২৭টি বই এখন বেস্ট সেলার। ছবি: সংগৃহীত

আর এক বছর পর ৪০-এর কোঠায় পৌঁছাবে বয়স। হঠাৎ পদোন্নতি হলো পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করা ক্যারেন উডসের। এখন থেকে ই-মেইল লিখতে হবে তাকে। কিন্তু তিনি তো নিরক্ষর। কীভাবে পড়তে-লিখতে হয়, জানেন না। প্রথমে বেশ লজ্জায় পড়ে যান। সবাই জেনে ফেললে কী ভাববে! তবে, সেই লজ্জা-ভয় তাকে আটকে রাখেনি। বরং নতুন পথ দেখিয়েছে।

যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, ওই প্রতিষ্ঠানই তাকে একটি অ্যাডল্ট লিটারেসি কোর্সে ভর্তি করে দেয়। ৩৯ বছর বয়সে তিনি শেখেন কীভাবে পড়তে ও লিখতে হয়। তখনই ঠিক করেছিলেন একটি বই লিখবেন। কোর্সের সহপাঠীদের সে কথা জানিয়েছিলেনও তিনি। বিন্দুমাত্র হাসি-ঠাট্টা না করে সবাই তাকে উৎসাহ দিলেন। 

ক্যারেন উডস জানান, ‘আমি সেই কোর্সে বসেই প্রথমবার ভাবলাম, আমি একটা বই লিখতে চাই। তখন কেউ হাসেনি, কেউ ঠাট্টা করেনি। বরং সবাই বলেছিল, লিখো! তিন মাসের মধ্যেই আমি “ব্রোকেন ইউথ” শেষ করে ফেললাম। হাতে লিখেছিলাম পুরোটা।’ তথ্যসূত্র ডেইলি মেইল, ওয়েলস অনলাইন ও মেট্টোর।

তার লেখা প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি কোনোভাবে পৌঁছায় স্থানীয় এক পত্রিকার কাছে। সেখানে থেকে পৌঁছে যায় এম্পায়ার পাবলিকেশনস নামের এক প্রকাশনা সংস্থার কাছে। ওই প্রকাশনীটির জন্য একের পর এক ২০টি উপন্যাস লিখেছেন তিনি। পরে ২০২০ সালে হ্যাপারনর্থ প্রকাশনী তার লেখা গ্রহণ করে। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ক্যারেনকে। দেশের বড় বড় সুপার মার্কেটে, অ্যামাজনের মতো প্ল্যাটফর্মে বেস্টসেলারের তালিকায় উঠে আসে তার নাম। তবে এত কিছুর পরও নিজেকে এতটুকু বদলাননি ক্যারেন। এখনো ক্লিনারের কাজ করেন তিনি।

পাশাপাশি একটি স্কুলে ‘বিহেভিয়ার টিমে’ কাজ করেন তিনি। এ ছাড়া কারাগারে বন্দীদেরও নতুন করে জীবন শুরু করতে অনুপ্রেরণা দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কারাগারে গিয়ে যখন বলি আমি ক্লিনার ছিলাম, পড়তে পারতাম না, ওরা চমকে যায়। কারণ, ওদের অনেকেই ভাবে নতুন করে জীবন শুরু করার আর কোনো সুযোগ নেই। আমি ওদের বলি, নিজের ওপর বিশ্বাস থাকলে অবশ্যই দ্বিতীয় সুযোগ আসবে।’

তিনি জানান, বই বিক্রি থেকে এখনো খুব বেশি আয় হয় না তার। ছয় মাসে চার হাজার পাউন্ডের মতো আয় হয় বই থেকে। তবে, বই লিখে যে পরিচয় তৈরি হয়েছে, তাতে তিনি আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। পাশাপাশি মানুষের কাছে অনেক বেশি সম্মান পাচ্ছেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘আমি চাই, ৪০ পেরোনো নারীরা জানুক—এখনো শুরু করা যায়। আমি তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। যারা ভাবে সন্তান আছে বলে আর কিছু করা যাবে না। আমি আজও বাসা পরিষ্কার করি, স্কুলে কাজ করি, নাটক লিখি, বই লিখি—সব একসঙ্গে। কেউ বলেনি আমাকে থামতে হবে, আমিও থামিনি।’

ক্যারেনের জন্ম ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। বড় হয়েছেন একটি কাউন্সিল এস্টেটে, যেখানে দারিদ্র্য ছিল নিত্যসঙ্গী আর পারিবারিক অশান্তি ছিল রোজকার বাস্তবতা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তিনি নিজে গর্ভবতী হন ১৫ বছর বয়সে। যে কারণে আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, গর্ভবতী হওয়ার সাত মাস পরেই জন্ম দেন এক মৃত সন্তানের। একের পর এক ধাক্কায় ভেঙে পড়তে পারতেন ক্যারেন। তবে তা না করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

উল্লেখ্য, ক্যারেনের লেখা বেশিরভাগ উপন্যাসই মূলত ক্রাইম থ্রিলার ঘরানার। তিনি শুধু বই লেখেন না, তার ঝুলিতে আছে সফল নাট্যকারের খ্যাতিও।

জে.এস/

ক্যারেন উডস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন