সোমবার, ৯ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ভারতের সঙ্গে সমঝোতার জন্য আন্তর্জাতিক ‘হস্তক্ষেপ’ চায় পাকিস্তান *** এবার বাড়ির একাংশ বিক্রির চেষ্টা ভাইয়ের—বাধা দিল সু চি’র আইনি দল *** ইউনূসকে লেখা চিঠিতে যা বলেছেন টিউলিপ *** মোদি-ইউনূসের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় *** করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ, সতর্কতার পরামর্শ সরকারের *** শহীদদের নামে কোরবানি ও মাংস বিতরণ করেছে জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স *** সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে আন্তরিক: প্রধান উপদেষ্টা *** টিউলিপের কোনো চিঠি পাইনি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব *** সীমিত পরিসরে চলছে চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাসেবা *** বলিউডে অভিষেক হচ্ছে আমির খানের মা জিনাত হুসেনের

ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক আরোপ

‘আমেরিকা থেকে রপ্তানি বাড়ানোর কথা অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৬:০৯ অপরাহ্ন, ৮ই এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে দেশটিতে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাচ্ছেন, সেভাবে ঘাটতি কমানো সম্ভব নয়। আবার বাংলাদেশও যেভাবে আমেরিকার উচ্চ শুল্কের খড়্গ থেকে বাঁচতে দেশটি থেকে রপ্তানি বাড়ানোর কথা বলেছে, তা বাজার অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ‘সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের’ (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।

তিনি বলেন, ‘আমেরিকা থেকে কটন বা সুতা আমদানি করা হয় বিনা শুল্কে। সেই সুতা দিয়ে তৈরি পোশাক বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। আমরা কি চাইলেই আমেরিকা থেকে সুতা আমদানি বাড়াতে পারব? আমরা বিভিন্ন ধরন, দাম ও বাজারের জন্য পোশাক উৎপাদন করি। ফলে সব পোশাক আমেরিকান সুতা দিয়ে তৈরি করা যাবে না; কমান্ড ইকোনমির মতো হুকুম দিয়ে তো এ আমদানি বাড়ানো সম্ভব নয়।’

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এ ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চিঠি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। চিঠিতে বাংলাদেশে আমেরিকার রপ্তানি বাড়ানোর কথা বলা হয়।

এ ছাড়া, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে দেশটির আরও ১০০টি পণ্য শূন্য শুল্কে বাংলাদেশে রপ্তানির সুবিধা দেবে সরকার। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সরকারের এ উদ্যোগের তথ্য জানিয়ে আমেরিকার বাণিজ্য বিভাগ ইউএসটিআরকে চিঠি পাঠিয়েছেন।

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান মনে করেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তা বিরল ঘটনা। এমন ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি। এর মধ্য দিয়ে বাজার অর্থনীতি ছুড়ে ফেলে দিলেন ট্রাম্প।’ আজ মঙ্গলবার (৮ই এপ্রিল) সুখবর ডটকমকে এসব কথা বলেন ড. রেহমান সোবহান।

তিনি বলেন, ‘নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যব্যবস্থা থেকে পৃথিবী যেন আবার সেই স্তালিন যুগের কমান্ড অর্থনীতিতে চলে যাচ্ছে। অর্থনীতি ও বাণিজ্যকে রীতিমতো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থনীতির সমস্যা অর্থনীতির নিয়মে সমাধান করা হচ্ছে না, বরং অন্যান্য বিবেচনায় তা করা হচ্ছে।’

তার মতে, ‘যারা বিশ্বায়ন শুরু করেছিল, অর্থাৎ আমেরিকা, সেই তারা আজ বিশ্বায়ন ব্যবস্থা ফেলে দিচ্ছে। এ বাস্তবতায় বাংলাদেশসহ অন্যদের টিকে থাকতে হবে। এতদিন বিশ্বব্যবস্থা একভাবে চলেছে; এখন বিশ্বব্যবস্থা আরেকভাবে চলবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন আর সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট নয়, অর্থাৎ সেরা মানুষরা টিকে থাকবে- এ নীতি নয়, বরং যারা সবচেয়ে ভালো আলোচনা বা চুক্তি করতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে।

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যায্য শুল্ক আরোপের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশকে আমেরিকার বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে। এশিয়ার দেশ, বিশেষ করে উদীয়মান পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশের পণ্যের ভালো বিকল্প বাজার হতে পারে।’

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের ঘোষণার সমালোচনা করে অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাণিজ্যের বিষয়টিকে এখন অস্ত্রে রূপান্তরিত করেছেন। এ ধরণের শুল্কারোপ অন্যায্য এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও)  নীতির প্রতি অবহেলা। তবে শেষ পর্যন্ত এ শুল্ককাঠামো টেকসই হবে না। খোদ আমেরিকাই এ পদক্ষেপ থেকে কোনো সুফল পাবে না।’

এইচ.এস/



অধ্যাপক রেহমান সোবহান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন